শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

তাপস-ইনু-মাকসুদ কামালের সাথে কী কথা শেখ হাসিনার

ট্রাইব্যুনালে ৪ অডিও

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩:০৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২৩:৪৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

তাপস-ইনু-মাকসুদ কামালের সাথে কী কথা শেখ হাসিনার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার  তিন ঘনিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কথোপকথনের চারটি অডিও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল ও তদন্ত দলের সদস্য, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা। 

এর মধ্যে দক্ষিণের তৎকালীন মেয়র ও শেখ হাসিনার ভাতিজি শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম মাকসুদ কামাল এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কথপোকথনের চারটি অডিও রয়েছে ।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জোহা এই অডিওগুলো আদালতে জমা দেন। ট্রাইব্যুনালে অডিওগুলো বাজিয়ে শোনানো হয়।

এসময় জোহা জানান, এসব অডিওতে এই তিনজনের সঙ্গে আন্দোলন দমনের বিষয়ে যার কণ্ঠ শোনা গেছে, সেটি শেখ হাসিনার। এখানে শেখ হাসিনার কণ্ঠে ড্রোন দিয়ে শনাক্ত করতে এবং হেলকপ্টার থেকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার কথা বলতে শোনা যায়। 

তানভীর হাসান জোহা এই মামলার ৫৩ নম্বর সাক্ষী। সাক্ষ্য শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাকে জেরা করেন।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই সাক্ষী প্রসিকিউশনের এবং ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির অন্যতম সদস্য। ওনার সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়বস্তু ছিল ডিজিটাল ফরেনসিক বিষয়ে যে ইভেস্টিগেশন করেছেন, তার কিছু অংশ। শেখ হাসিনার তিনটি অডিও সম্বলিত সিডি জব্দ করেছেন। ৩টি মোবাইলের সিডি জব্দ করেছেন।

এই সাক্ষ্য বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।

কী আছে এসব অডিওতে:

এব্যাপারে মিজানুল ইসলাম বলেন, “শেখ হাসিনা এবং ফজলে নূর তাপসের কথপোকথনে আন্দোলনকারীদের দমনের জন্য উনি (শেখ হাসিনা) লেথাল উইপন, গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রোন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে শনাক্ত করে হেলিকপ্টারে গুলির কথা বলেছেন।”

অডিওতে এস এম মাকসুদ কামালকে তার বাসায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামসহ কয়েকজনের অবস্থানের কথা বলতে শোনা যায়।

এ ব্যাপারে মিজানুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় একজন শিক্ষক হিসেবে যে ধরনের কথাবার্তা বলেছেন; সন্ত্রাসী লালন পালনের যে প্রক্রিয়া বর্ণনা করেছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। উনি সন্ত্রাসীদের কীভাবে লালন করবেন, কীভাবে ব্যবহার করবেন, তার একটা বর্ণনা দিয়েছেন।”

শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর কথপোকথন নিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, এদেশে একাত্তর সালে মানুষ যুদ্ধ করেছিল বিদেশি দখলদারের বিরুদ্ধে, যারা এদেশের মানুষের ওপর বম্বিং করেছে, গুলি করেছে। দেশের একজন সরকারপ্রধান, যিনি তাকে নির্বাচিত দাবি করেন, তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ছত্রীসেনা এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছেন; বম্বিং করার নির্দেশ দিচ্ছেন।

এই প্রসিকিউটর আরো বলেন, এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা উনি বন্ধ করে দিয়েছেন। সেটাকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপন করতে চেষ্ট করেছেন। আরেকটি কাজ করেছেন, উনি বলেছেন যে, আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে, ওরা পুড়িয়ে দিল সেতু ভবন। তার মানে আগুন দেওয়ার নির্দেশ উনি দিয়েছেন। কিন্তু উনার কাঙ্খিত জিনিস না পোড়ায়ে অন্য স্থাপনা পুড়ে ফেলা হয়েছে।

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন