অটোরিকশা ছিনতাই করতেই শিশু হাসিবুলকে হত্যা: পিবিআই
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:২৮, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
অটোরিকশা ছিনতাই করতেই শিশু হাসিবুলকে হত্যা: পিবিআই। ছবি: সমাজকাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মো. হাসিবুল ইসলামকে (১৪) হত্যার রহস্য উম্মোচনের দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনার সাত বছর পর মামলার আসামি মো. হৃদয়কে (২৮) চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার বার্মা কলোনি থেকে গ্রেপ্তার করেছে সংস্থাটি।
পিবিআই বলেছে, শিশু হাসিবুল ইসলামের অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের জন্য হৃদয়সহ ‘হত্যাকারীরা’ তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তার মরদেহ ধানি জমিতে ফেলে রিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যান।
নিহত হাসিবুল কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের লেশিয়ারা গ্রামের মো. মোবারক হোসেনের ছেলে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে গ্রেপ্তারকৃত হৃদয় একই উপজেলার নিমবাড়ির (মধ্যপাড়া) মুজিবুর মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তার অভিযান চলাকালে আসামির অতর্কিত হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন বলেও জানিয়েছে পিবিআই।
২০১৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি হাসিবুল তার বাবার অটোরিকশাটি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে আর বাড়ি ফেরেনি। নিখোঁজের পরদিন হাসিবুলের পিতা মোবারক হোসেন কসবা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা সোয়া ১১টায় আখাউড়া উপজেলার নোয়াপাড়া বিলের ধানি জমি থেকে অজ্ঞাতনামা একজন শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অজ্ঞাতনামা ছেলেটির সংরক্ষিত ডিএনএ প্রোফাইলের সাথে হাসিবুলের বাবা মো. মোবারক হোসেন ও মা আলেয়া বেগমের ডিএনএ পরীক্ষা করে এই মরদেহ হাসিবুলের বলে নিশ্চিত হয়।
আখাউড়া থানার এসআই আবদুর রাজ্জাক, ধরখার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. রায়হান উদ্দিন ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন দীর্ঘ তদন্ত করেও হাসিবুল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে মামলাটি পিবিআই/সিআইডিকে দিয়ে তদন্ত করাতে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানান। পরে দায়িত্ব পেয়ে পিবিআইয়ের সাব-ইন্সপেক্টর মো. হাবিব উল্লাহ সরকার মামলাটির তদন্ত শুরু করেন।
পিবিআইয়ের তদন্তে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শিশু হাসিবুল তার বাবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মো. হৃদয় ও তার ৩/৪জন সহযোগী হাসিবুলের অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নিতে সেটি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘসময় ঘোরাফেরা করেন। পরে বিকেল চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের নোয়াপাড়া রাস্তার পাশের বিলের মধ্যে ধানি জমিতে নিয়ে হাসিবুলের হাত, পা বেঁধে ফেলেন। আসামি হৃদয় শিশু হাসিবুলকে শ্বাসরোধে হত্যা এবং মরদেহ বিলের মধ্যে ধানি জমিতে ফেলে দেন। পরে আসামিরা তার অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যান।
পিবিআই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার শচীন চাকমা বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা। গ্রেপ্তারকৃত হৃদয়কে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
