মা-বাবার আশ্রয় পেল চিরকুটসহ হাসপাতালে রেখে যাওয়া শিশুটি
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮:৩৫, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
শিশুটির ঠিকানা হয়েছে নওগাঁ সদর উপজেলার এনায়েতপুর (শান্তাহার) এলাকার এক নিঃসন্তান দম্পতির বাড়িতে। ছবি: সমাজকাল
‘আমি এক হতভাগি, বাচ্চাটাকে কেউ নিয়ে যাবেন’- নবজাতকের পাশে এমন চিরকুট ও ওষুধ রেখে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে যাওয়া সেই শিশুটিকে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটির ঠিকানা হয়েছে নওগাঁ সদর উপজেলার এনায়েতপুর (শান্তাহার) এলাকার ওই দম্পতির বাড়িতে।
হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে যাওয়ার একমাস পর শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে পালক মা-বাবার আশ্রয় পেল শিশুটি।
৬ নভেম্বর ওই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এই নবজাতককে ভর্তি করে পালিয়ে যান নানা-নানি পরিচয় দেওয়া এক দম্পতি।
শিশুটির চিকিৎসা দেওয়া হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘একজন নারী বাজারের ব্যাগে নবজাতক শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন এবং তার মাকে ডেকে আনার কথা বলে পালিয়ে যান। পরে আমরা নবজাতক শিশুর সঙ্গে চিরকুটটি পাই। তাতে লেখা রয়েছে, শিশুটি মুসলিম। বিশেষ কারণে ফেলে গেলাম। কাউকে লালন-পালন করতে দিবেন মানুষ করার জন্য।পরে বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সুচিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। পরে তারা শিশুটিকে সুস্থ করে তোলেন’।
তিনি জানান, ১১ নভেম্বর উপজলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় শিশুটিকে লালন-পালন ও পরিচর্যাকারীর জন্য ঘোষণা দেওয়া ১৫টি আবেদন পড়ে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে ওই নিঃসন্তান দম্পতিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বোরহান উদ্দিন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব গোলাম আজম, অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল ইসলাম, অরবিন্দ শিশু হাসপাতালের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি আব্দুস সামাদ, সহ সভাপতি মো. রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম কবিরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘শিশুটিকে লালন-পালন ও চিকিৎসা দিয়ে অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল যে অবদান রেখেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই, এই শিশুটি একদিন আলোকিত মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিতপ্রাণ হবে’।
