নীলফামারীতে আকস্মিক ঝড়ে তছনছ ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি
আহত অন্তত ৫০
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:২৪, ৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০৩:২৯, ৬ অক্টোবর ২০২৫

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আকস্মিক ঝড়ের আঘাতে অন্তত ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন।
রবিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডজুড়ে প্রবল ঝড় আঘাত হানে, মুহূর্তেই তছনছ হয়ে যায় ১১টি পাড়া।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ভারী বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ শুরু হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়সদৃশ ঝড়, যা মাঝাপাড়া, বানিয়াপাড়া, হাজীপাড়া, পোদ্দারপাড়া, জিকরুল মেম্বারের পাড়া, বাবুপাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, বৈরাগীপাড়া, মুন্সিপাড়া ও কালিরথান এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। ঘরের টিন উড়ে গিয়ে গাছে ঝুলে থাকে, অনেক বাড়ির চালচিত্র সম্পূর্ণ উধাও হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, ঝড়ে অন্তত ৮টি গরু মারা গেছে এবং বহু গবাদিপশু আহত হয়েছে। ১০ হেক্টরেরও বেশি জমির ধান, সবজি ও কলা ফসল নষ্ট হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় ও তার ছিঁড়ে যাওয়ায় প্রায় এক হাজার পরিবার অন্ধকারে রয়েছে।
মাঝাপাড়ার বিজলি বেগম বলেন, `সকাল ৮টার সময় ঝড়ে আমার ঘরবাড়ি সব ভেঙে গেছে। এখন থাকার মতো কোনো জায়গা নেই, খোলা আকাশের নিচে আছি।‘
নুরুল ইসলাম, একজন দিনমজুর, বলেন,`কিছু বুঝে উঠার আগেই সব শেষ। ঘর-বাড়ি কিভাবে ঠিক করবো, আল্লাহই জানেন।‘
আরেক বাসিন্দা সোনেকা বেগম বলেন,`আমি বাসায় ছিলাম না, ফিরে এসে দেখি ঘর মাটিতে। ছেলের বউকে টেনে বের করা হয়েছে ভাঙা ঘরের নিচ থেকে।‘
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন লিডার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গাছপালা পড়ে যাওয়ায় দুর্গত এলাকায় প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রমে স্থানীয়দের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
গাড়াগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. জোনাব আলী বলেন, `পাঁচটি ওয়ার্ডের অন্তত ১২টি পাড়ায় ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে আছে।‘
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নীল রতন দেব জানান, আহতদের চিকিৎসায় মেডিকেল টিম কাজ করছে, গুরুতর একজনকে জেলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, তিন হেক্টর কলা, দুই হেক্টর সবজি ও পাঁচ হেক্টর ধানক্ষেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য শুকনো খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক নাইরুজ্জামান বলেন,`প্রায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ হাজার পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে এবং তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।‘