গাইবান্ধা কারাগারে আ.লীগ নেতার মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ ‘পরিকল্পিত হত্যা’
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫:২৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আবু বক্কর সিদ্দিক মুন্না (৬৮) নামের এক হাজতির মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্না ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সাবেক সহসভাপতি ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি গাইবান্ধা শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং হোসেনপুর গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে।
কারাগারের জেলার মো. আতিকুর রহমান জানান, মুন্নার বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা ছিল। চলতি মাসের ২ তারিখে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। রবিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তিনি দীর্ঘদিন প্রেশার, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। তবে কারাগারে চিকিৎসায় কোনও অবহেলা করা হয়নি বলেও দাবি করেন জেলার।
কিন্তু পরিবার থেকে উল্টো অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাদের দাবি, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের পর কারাগারে তাকে নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মুন্নার ছেলে সৌমিক বলেন, “বাবা দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তবু তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করা হয়। কারাগারে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, তার বাবাকে প্রথমে বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও বিস্ফোরক দ্রব্য মামলায় আটক করা হয়। দীর্ঘদিন জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পেলেও জেলগেটে আরেকটি মামলায় পুনরায় গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।
এদিকে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত মুন্নার মরদেহ গাইবান্ধা সদর হাসপাতালেই রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঘটনাটি নিয়ে গাইবান্ধায় রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে। একদিকে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে ‘প্রাকৃতিক মৃত্যু’, অন্যদিকে পরিবার অভিযোগ করছে ‘পরিকল্পিত হত্যা’।