নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ–২০২৫ উপলক্ষে মহিলা পরিষদের আলোচনা সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:২৯, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৩৫, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ–২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে নারী সাংবাদিকদের সঙ্গে অুনষ্ঠিত মতবিনিময় সভা। ছবি: মহিল
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ–২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর,২০২৫) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম–মুনিরা খান মিলনায়তনে নারী পাতার সম্পাদক ও নারী বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। তিনি বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। ইউএন উইমেনের জরিপ অনুযায়ী, প্রতি তিনজন নারীর একজন কোনো না কোনো সহিংসতার শিকার হন। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে নানা নীতিমালা থাকলেও সহিংসতা কমার প্রবণতা দেখা যায়নি। বিশেষ করে সাইবার সহিংসতা নারীর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে।’
তিনি আরও জানান, নারীর প্রতি বিভিন্ন সহিংসতা প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনায় প্রস্তাবিত আইন দ্রুত পাস হলে সহিংসতা কমাতে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সমাজে নারীর স্বাধীনতা ও মুক্তির আকাঙ্খা বৃদ্ধি পেয়েছে—এটি বড় অর্জন। পারিবারিক ও সামাজিক পরিবর্তনের ইতিবাচক দিকগুলো গণমাধ্যমকে তুলে ধরতে হবে। প্রতিবাদের ধরন বদলালেও নারীর অগ্রযাত্রা থেমে থাকতে পারে না।’
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার ধরণ ও প্রকৃতি বদলেছে। সাইবার সহিংসতা এখন বড় হুমকি। তিনি বলেন, ‘সহিংসতা প্রতিরোধে শক্তিশালী নারী আন্দোলনের পাশাপাশি গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমাদের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে।’
প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বার্তা সম্পাদক মাহফুজা জেসমিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ৫৫ বছর ধরে নারীর মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করছে। শারীরিক, মানসিক, যৌন, পারিবারিক, আর্থিক, সাইবার সহিংসতা থেকে মানবপাচার পর্যন্ত নানা ধরনের নির্যাতনের প্রেক্ষাপট তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আইনি কাঠামো থাকলেও সেগুলোর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত না হওয়ায় সহিংসতা কমছে না। গণমাধ্যম সত্যকে সামনে আনতে পারে—এটি সহিংসতা প্রতিরোধে বড় হাতিয়ার।’
মুক্ত আলোচনায় সাংবাদিক নাসরিন গীতি, এমরানা আহমেদ, রীতা ভৌমিক, অর্চি হক, রাবেয়া বেবী, তাপসী রাবেয়া, তাসকিনা ইয়াসমিন, মারওয়া জান্নাত মাইশাসহ উপস্থিত সাংবাদিকরা বলেন— নারী নির্যাতন একটি বহুমুখী ইস্যু; সাইবার সহিংসতা শিকার হচ্ছেন শুধু কিশোরী বা তরুণী নন, মধ্যবয়সী নারীরাও। সচেতনতা, প্রতিবাদ এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তথ্য প্রচার—এসবকে গুরুত্ব দিতে হবে। সংবাদ প্রকাশে বাধা থাকলেও নারীবান্ধব সংবাদ পরিবেশন অব্যাহত রাখতে হবে।
সঞ্চালনা করেন প্রচার ও গণমাধ্যম উপপরিষদ সদস্য এবং দৈনিক ভোরের কাগজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সেবিকা দেবনাথ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমণ্ডলী, সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
