আমিরাত ও মরক্কো থেকে ৮০ হাজার টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:০৬, ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৩৬, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
আমিরাত ও মরক্কো থেকে সার আমদানির সিদ্ধান্ত। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৃষি ক্ষেত্রে সার সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কো থেকে ৮০ হাজার টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৬ কোটি ৪৭ লাখ ৩৯ হাজার ৪০ টাকা, যার মধ্যে ৪০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং ৪০ হাজার টন ডিএপি সার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ৪০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। ফার্টিগ্লোবের সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি চুক্তি ২০০৭ সাল থেকে চলমান। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর নতুন চুক্তির মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২ লাখ ১০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি সই হয়।
ফার্টিগ্লোব থেকে ৪০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০১ কোটি ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। প্রতি টন ইউরিয়া সারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০৯.৫০ মার্কিন ডলার।
সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের ইউরিয়া সার সরবরাহের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে এবং কৃষকরা সময়মতো সার পাবে।
মরক্কো থেকে ডিএপি সার আমদানি
কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মরক্কো থেকে এই সার আনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৪০ টাকা, প্রতি টন সারের দাম ৬৮২.৬৭ মার্কিন ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার আমদানির এই উদ্যোগ বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ও ফসলের স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশে ইউরিয়া ও ডিএপি সারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন সবসময়ই পর্যাপ্ত হয় না। তাই সরকার বিদেশ থেকে সরাসরি আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিত করছে।
এছাড়া, জিটুজি চুক্তির আওতায় আমদানি করার ফলে সরকারের ক্রয় প্রক্রিয়া দ্রুত এবং স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হচ্ছে।
অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী মৌসুমে কৃষকেরা সময়মতো সার পাবে, যার ফলে ধান, গম, সবজি ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন আরও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারের এই উদ্যোগ কৃষি খাতকে সাশ্রয়ী এবং স্থিতিশীল সার সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বড় অবদান রাখবে।
