শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় বিমান হামলা ইসরায়েলের
চুক্তিলঙ্ঘনের অভিযোগ হামাসের বিরুদ্ধেও
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:১৩, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

দক্ষিণ গাজায় আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রবিবার রাফা ও তার আশপাশের এলাকায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ হামলায় বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং বেসামরিক হতাহতের আশঙ্কা প্রবল।
ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, চলমান উত্তেজনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাৎজ ও সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে জরুরি ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে, সরকারি সম্প্রচার সংস্থা জানায়, হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ‘গুলি বিনিময়’-এর পরই বিমান হামলা হয়।
অন্যদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফায় একটি আইইডি বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা আহত হন। তাদের দাবি, ওই বিস্ফোরণটি ঘটে তখন, যখন ইসরায়েলি সেনারা যুদ্ধ চলাকালীন এক সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছিল। যদিও এই তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, রাফার যে অংশ এখনো ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে, সেখানে তীব্র লড়াইয়ের পর দুটি বিমান হামলা হয়। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, হামাস যোদ্ধারা স্নাইপার রাইফেল ও রকেটচালিত গ্রেনেড ব্যবহার করে সেনাদের ওপর হামলা চালায়।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হামাস অস্ত্র সমর্পণ না করা পর্যন্ত, গাজা সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধের সমাপ্তি হবে তখনই, যেকোন ভাবেই যখন হামাস সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করবে।’
অন্যদিকে, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ জানায়, শনিবার ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক গোলা এক যাত্রীবাহী বাসে আঘাত হানে, এতে নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হন—যাদের মধ্যে চার শিশু ও তিন নারীও রয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুক্রবার জানিয়েছিল, রাফা এলাকায় ‘সন্ত্রাসীরা’ সেনাদের ওপর গুলি চালায়, যদিও তাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরে খান ইউনিস এলাকায়ও বিমান হামলা চালানো হয় বলে দাবি করে সেনারা।
তারা আরও জানায়, ‘তাৎক্ষণিক হুমকি সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’
তবে এরই মধ্যে ইসরায়েল ও হামাস—দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে শান্তিচুক্তি বা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এই সংঘর্ষ গাজায় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে।