শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

| ৩ কার্তিক ১৪৩২

রাজকীয় উপাধি ছাড়লেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:১১, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৫৮, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

রাজকীয় উপাধি ছাড়লেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

ব্রিটিশ রাজপরিবারে বড় এক পরিবর্তনের ঘোষণা এসেছে। রাজা চার্লসের ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু আনুষ্ঠানিকভাবে তার রাজকীয় উপাধি ‘ডিউক অব ইয়র্ক’ ত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাজা চার্লসের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বাকিংহাম প্যালেস।
জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে অ্যান্ড্রুর সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ার পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

প্রিন্স অ্যান্ড্রু এক বিবৃতিতে বলেন,“রাজা এবং আমার ঘনিষ্ঠ ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা শেষে আমরা একমত হয়েছি যে, আমার বিষয়ে চলমান অভিযোগগুলো মহামান্য রাজা এবং রাজপরিবারের দায়িত্বশীল কার্যক্রম থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে। তাই, পরিবারের এবং দেশের প্রতি কর্তব্যবোধ থেকেই আমি আমার উপাধি ও সম্মানসূচক পদবিগুলো ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বাকিংহাম প্যালেসের মুখপাত্র জানান, রাজপরিবার এই বিবৃতিটি সমর্থন করছে এবং রাজা চার্লস নিজে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজপ্রাসাদের ওয়েবসাইটে বার্তাটি প্রকাশ করা হয় শিরোনামে—
“A statement by Prince Andrew, published 17 October 2025.”

অ্যান্ড্রুর কন্যা প্রিন্সেস ইউজেনি এবং বিয়াট্রিসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি, তবে সূত্রগুলো বলছে, পরিবারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তারা একমত হয়েছে। 

প্রিন্স অ্যান্ড্রু ২০২০ সাল থেকেই রাজকীয় দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত নতুন তথ্যে রাজপরিবারের ওপর চাপ বাড়ছিল।

রাজতন্ত্র বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এটি রাজা চার্লসের নেতৃত্বে রাজতন্ত্রকে আধুনিক ও দায়বদ্ধ রাখার প্রচেষ্টারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ
অ্যান্ড্রু একসময় মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রিয় সন্তান হিসেবে সবার কাছে প্রিচিত ছিলেন। দেখতে ছিলেন চমৎকার। তরুণ সেনাকর্মকর্তা হিসেবে তার বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। এখন তার সবই অতীত। এখন সাধারণ মানুষ তাকে জানে  যৌন নিপীড়নের অভিযুক্ত হিসেবে। 

নারী পাচার ও শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত কুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের প্রয়াত জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে। এপস্টেইনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাকিংহাম প্যালেসের ওপর চাপ বাড়ছিল।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বয়স এখন ৬৫ বছরি।   এলিজাবেথের ছোট ছেলে এবং বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের ভাই তিনি। গতকাল শুক্রবার এক ব্যক্তিগত বিবৃতিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রু ডিউক অব ইয়র্কসহ তার সব রাজ উপাধি ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

বেশ কয়েক বছর আগে ভার্জিনিয়া জিউফ্রি নামের এক নারী যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযোগ করেন, তিনি ২০০১ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তখন তার বয়স ছিল ১৭। জিউফ্রি মারা যান। তার পরিবারের দাবি, যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মানসিক চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
এ চাপের কারণেই হয়তো প্রিন্স অ্যান্ড্রু স্বেচ্ছায় তার সব উপাধি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রাচীনতম ও সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ নাইটশিপ অর্ডার, অর্ডার অব দ্য গার্টারের সদস্যপদও ত্যাগ করছেন।
 

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন