ভারতের প্রথম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য হতে চলেছে কেরালা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:১৮, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত
ভারতের কেরালা রাজ্য ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে। আসছে নভেম্বরেই এটি হবে দেশের প্রথম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য। রাজ্যের সমাজকল্যাণমন্ত্রী এম বি রাজেশ জানিয়েছেন, ‘‘দেশের মধ্যে প্রথমবার কোনো রাজ্য চরম দারিদ্রসীমা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হচ্ছে—এটি কেরালাবাসীর জন্য গর্বের মুহূর্ত।’’
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইম অব ইন্ডিয়ার খবরে আরও বলা হয়, ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করা হবে।
৭৮ বছরের স্বাধীনতার পর এক অনন্য অর্জন
ভারতের স্বাধীনতার ৭৮ বছর পর প্রথম কোনো রাজ্য ‘দারিদ্রমুক্ত’ মর্যাদা পেতে যাচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ১ নভেম্বর এই ঘোষণা দেবে পিনারাই বিজয়নের সরকার। রাজ্যের উদ্যোগের নাম—‘এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্টযার মূল লক্ষ্য ছিল—কেরালায় যেন একজন নাগরিকও চরম দারিদ্রসীমার নিচে না থাকে।
যেভাবে কাজ করেছে ইপিইপি প্রকল্প
রাজ্যজুড়ে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত সমীক্ষা চালিয়ে চিহ্নিত করা হয় ৬৪ হাজার দরিদ্র পরিবার। তাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও জীবিকা নির্বাহের নিশ্চয়তা দেয় প্রশাসন।
সমীক্ষায় দেখা যায়—৩৫ শতাংশ পরিবারের কোনো উপার্জন ছিল না,২৪ শতাংশের স্বাস্থ্য সমস্যা,২১ শতাংশের দুই বেলা খাবার মেলে না এবং ১৫ শতাংশের স্থায়ী বাসস্থান ছিল না।
এই প্রতিটি সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকার বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়। ছোট ছোট কমিউনিটি স্কিমের মাধ্যমে তাদের চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়।
মন্ত্রী রাজেশ জানান, “ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর পুনর্বাসনই ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ।” রাজ্যজুড়ে ইতিমধ্যেই ৭,০৮৩টি নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের কাজ শেষ হয়েছে। এভাবে ধাপে ধাপে দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্য পূরণে সফল হয় রাজ্য।
বাম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ সরকারের আমলে নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কেরালা কেবল ভারতের প্রথম নয়, বিশ্বে চীনের পর দ্বিতীয় রাজ্য বা অঞ্চল হিসেবে চরম দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা পেতে যাচ্ছে।
মন্ত্রী রাজেশের মতে, “এটি শুধু একটি প্রশাসনিক সাফল্য নয়—এটি মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ইতিহাস।”
কেরালার এই পদক্ষেপে ভারতের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজ্যের উন্নয়ন মডেল এখন অন্যান্য রাজ্যের জন্য একটি অনুসরণযোগ্য দৃষ্টান্ত।