রয়টার্সকে সজীব ওয়াজেদ জয়
আ.লীগকে নিষিদ্ধ রাখা হলে সহিংসতা বাড়বে, নেতাকর্মীরা নির্বাচন বন্ধ করে দেবে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:৪০, ১৭ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৪৮, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে দলটির নেতাকর্মীরা ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বন্ধ করে দেবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা না উঠলে প্রতিবাদ আরও বাড়বে—এবং তা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারটি প্রতিবেদন আকারে আজ সোমবার রয়টার্সের ওয়েবপেজে দেওয়া হয়েছে।
আজ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা প্রথম মামলার রায় ঘোষণা করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই রায় প্রসঙ্গে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, “আমরা আগেই জানি কী রায় হবে। ওরা লাইভে দেখাবে। ওরা দোষী ঘোষণা করবে এবং সম্ভবত মৃত্যুদণ্ড দেবে।”
শেখ হাসিনার এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণসহ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না এলে তারা আপিল করবে না।’
তিনি দাবি করেন— ভারত শেখ হাসিনাকে পুরোপুরি নিরাপত্তা দিচ্ছে এবং তাকে “রাষ্ট্রপ্রধানের মতো সম্মান” দিচ্ছে।
হাসিনা আগেও রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি দিল্লিতে চলাফেরা করতে পারছেন, কিন্তু নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। ১৯৭৫ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে তার বাবা-মা ও তিন ভাই নিহত হয়েছিলেন।
গত মে মাসে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, “আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হতে দেব না। আমাদের আন্দোলন দিন দিন শক্তিশালী হবে এবং যা কিছু প্রয়োজন, আমরা করব।”
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হস্তক্ষেপ না করলে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সহিংসতা বাড়বে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন— আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই এবং নির্বাসিত নেতাদের সহিংসতার হুমকি “অতিমাত্রায় দায়িত্বজ্ঞানহীন।”
জয় বলেন, “আওয়ামী লীগ এখনো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করতে অস্বীকার করছে। তাই তাদের সঙ্গে সংলাপের সুযোগ নেই।”
সাক্ষাৎকারে জয় জানান, তিনি ও তার মা শেখ হাসিনা দেশে থাকা কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বিএনপি বা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগাযোগ নেই।
জয় বলেন, “গত কয়েক দিনে সারা দেশে হরতাল, বড় বিক্ষোভ দেখেছেন। এগুলো আরও বড় হবে।”
২০২৪ সালে বিরোধী দল বর্জিত নির্বাচনে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসলেও পরের বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়া শেখ হাসিনাকে অধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী দমন–পীড়ন এবং গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্তের অভিযোগে সমালোচিত করা হচ্ছিল।
এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, “মা ক্ষুব্ধ, হতাশ, ক্ষতবিক্ষত—আমরা সবাই যেভাবেই হোক লড়াই চালিয়ে যাব।”
