রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

| ১০ কার্তিক ১৪৩২

এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে গুমের বিচার নিশ্চিত অপরিহার্য: আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০:৪৭, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:৫৫, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে গুমের বিচার নিশ্চিত অপরিহার্য: আসিফ নজরুল

অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বর্তমান পরিবর্তনকে স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ‘গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্ট অপরাধ। এটি শুধু আইনগত নয়, নৈতিক ও মানবিক সংকটও বটে। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও জরুরি।’

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ: গুম মোকাবিলায় বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় কর্মশালার আয়োজন করে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।

আসিফ নজরুল বলেন, বিচার বিভাগের সাহসী ও নিরপেক্ষ ভূমিকা গুমের বিচার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য।’

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুমসংক্রান্ত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানান, কমিশন ইতিমধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করছে এবং সাক্ষী সুরক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দিকেও নজর দিচ্ছে।

কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস। এতে দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের প্রায় ৯০ জন বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠন, স্বাধীন তদন্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা, অনলাইন জিডি সহজ করা, সাক্ষী সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের মতো সুপারিশ করেন।

তারা আরও প্রস্তাব করেন, বিচার বিভাগ ও কমিশনের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের কাঠামো উন্নয়ন এবং মিথ্যা মামলা নিরসনে ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন