মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড: মরদেহ শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:৫৪, ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৩৭, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে এক পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গোডাউন পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১২টি ইউনিটের টানা কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আংশিক নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে গার্মেন্টস অংশ থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইন্টেইন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর অবস্থা এতটাই বিকৃত যে ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া তাদের শনাক্ত করা সম্ভব নয়। মরদেহগুলো অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, আগুন লাগার সময় কারখানায় থাকা বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে অচেতন হয়ে প্রাণ হারান তারা।”
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তার ভাষায়, “দোতলা ও তিনতলা মিলিয়ে বিভিন্ন কর্নারে মরদেহ পাওয়া গেছে। কেউ নিচে নামতে পারেননি, আবার ছাদের গ্রিলের দুটি দরজা তালাবদ্ধ থাকায় ওপরে উঠতেও পারেননি।”
এ ঘটনায় এখনো আরও কিছু মানুষ নিখোঁজ থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, গার্মেন্টস অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন ও ধোঁয়া এখনও জ্বলছে। সেখানে ছয় থেকে সাত ধরনের রাসায়নিক মজুত ছিল। আগুন নেভাতে আধুনিক লুপ ৬০ ড্রোন ও গ্রাউন্ড মনিটর ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া পাউডার, পানি, এনজাইম ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম আরও জানান, “এই গার্মেন্টস বা কেমিক্যাল গোডাউনের কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান, বৈধ লাইসেন্স বা অনুমোদনই ছিল না। আশপাশের শ্রমিকদের জিজ্ঞাসা করেও গার্মেন্টসটির নাম জানা যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনায় একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন, তবে ফায়ার সার্ভিসের কেউ আহত হননি।”
মরদেহ উদ্ধারের কাজ এখনো চলছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা। রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিচ্ছেন।
আগুন লাগার কারণ প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট না হলেও অবৈধ রাসায়নিক মজুত ও নিরাপত্তাহীন গুদাম কাঠামো এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে।