বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বহাল থাকছেন এস আলম

এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলমের (এস আলম) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া মেমো স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে দাবি এস আলম বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই বহাল থাকছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার (১৬ নভেম্বর) রুলসহ এ স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ। আজ রোববার এ আদেশ দেন। রুলে সিঙ্গাপুর থেকে সাইফুল আলমকে কূটনৈতিক মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি এবং গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় ও পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়েছে।।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ২০২০ সালের ১৯ জুলাই মেমোতে জানিয়েছিল, সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব গ্রহণ করায় সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন মঞ্জুর করেছে সরকার। এর বৈধতা নিয়ে চলতি মাসে রিটটি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। তার কাছে ইসলামী ব্যাংকের পাওনা এক লাখ কোটিরও বেশি টাকা বলে জানিয়ে এই অর্থ উদ্ধারে রিটটি করা হয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির আইনজীবীরা।

হাইকোর্টে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম ও আইনজীবী আবদুল্লাহ আলম মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।

আইনজীবী আবদুল কাইয়ূম পরে জানান, প্রতারণামূলক উদ্দেশ্যে সাইফুল আলম (এস আলম) ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন, যেন দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া টাকা দিতে না হয় এবং ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে সুরক্ষা পেতে পারেন। নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে দাবি করে তিনি আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে গিয়েছেন। অসৎ উদ্দেশ্যে তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। 

তিনি জানান, সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে মেমো দিয়ে মঞ্জুর করেছিল, তা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বহাল থাকছেন।

জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী আরও বলেন, ২০২০ সালে নাগরিকত্ব ত্যাগ করলেও বিভিন্ন ঋণসংক্রান্ত নথি–তথ্যাদিতে এস আলম নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দাবি করছেন দেখা যাচ্ছে। আবার সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে আন্তজাতিক সালিসি আদালতে গিয়ে বাংলাদেশে তার বিনিয়োগের সুরক্ষা চাচ্ছেন।