সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫

| ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে স্বাস্থ্য সহকারীরা: বন্ধ টিকাদন কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮:০০, ১ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:০৬, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে স্বাস্থ্য সহকারীরা: বন্ধ টিকাদন কর্মসূচি

তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে স্বাস্থ্য সহকারীরা: বন্ধ টিকাদন কর্মসূচি। ছবি: সমাজকাল

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্য নিরসন ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানসহ ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে টানা তৃতীয় দিনের মতো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন দেশের সরকারি স্বাস্থ্য সহকারীরা। 

এ কর্মসূচির ফলে সারাদেশে বন্ধ রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার আউটরিচ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র। এর ফলে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হওয়া ১৫ হাজার টিকা কেন্দ্রে থেকে প্রায় দেড় লাখ মা ও শিশু নিয়মিত টিকাদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে মৃত্যুর ঝুকির আশংকা রয়েছে টিকা বঞ্ছিত এ সকল মা ও শিশুদের। 

অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা স্বাস্থ্য সহকারীরা বলছেন, তারা প্রান্তিক এ জনগোষ্ঠিকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্ছিত করে এ কর্মবিরতিতে যেতে চাননি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা তাদের এই কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য করেছে। কারণ তারা বারবার প্রস্তাবিত দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে আসছেন দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে। 

‘বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর ব্যানারে শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে এই অবস্থান কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। দাবি আদায় জিও  (প্রজ্ঞাপন) না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মস্থলে ফিরবেন না বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য সহকারীরা। 

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তৃতীয় দিনের মতো চলা এ অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের ৬৪ জেলা থেকে হাজার হাজার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা ব্যানার, ফেষ্টুন ও মনিপাতা নিয়ে অংশ নিয়েছেন।   

স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতাসংযুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা, সকল স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শককে প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতন স্কেল পুর্ননিধারণের সময় প্রাপ্ত টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা ও ইতোমধ্যে ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) কোর্স সম্পন্নকারীদের সমমান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া এক স্বাস্থ সহকারী বলেন, “আমরা যে কত অবহেলা ও বৈষম্যর শিকার তা বলার ভাষা নেই। ১৯৭৭ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুসারে এইচএসসি পাশ স্বাস্থ্য সহকারীদের ১৬তম গ্রেডে মূল বেতন ছিল ৩০০ টাকা। কৃষি বিভাগের এসএসসি পাশ ব্লক সুপারভাইজার যারা তারা ১৯৭৭ সালের জাতীয় বেতন স্কেলে ১৯তম গ্রেডে মূল বেতন পেতেন ২৪০ টাক।” 

এই স্বাস্থ্য সহকারী আরও বলেন, “১৯৮৫ সালের ৫ আগষ্ট সরকারী এক আদেশে তাদের বেতন স্কেল আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে ১৪তম গ্রেডে উর্ত্তীণ করা হয় ও ২০০১ সালের ২৩ এপ্রিল আবার তাদেরকে ১১তম গ্রেডে আপগ্রেডেশন করে টেকনিক্যাল মর্যাদা প্রদান করা হয় এবং ২০০৫ সালের ২৩ এপ্রিল সরকারী আদেশে পদবী পরিবর্তন করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা করা হয়।” 

তিনি আরও বলেন, “প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের ভেটানারী ফিল্ড এসিস্ট্যান্টরা ১৯৭৭ সালের জাতীয় বেতন স্কেল ১৯তম গ্রেডে মূল বেতন পেতেন ২৪০ টাকা। ব্লক সুপারভাইজারদের সাথে ১৯৮৫ সালে সরকারী আদেশের মাধ্যমে তাদেরও ১১তম গ্রেডে উত্তীর্ণ করে এবং টেকনিক্যাল মর্যাদা প্রদান করা হয়।”

আরেক স্বাস্থ্য সহকারী বলেন, “২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পাস সহকারী শিক্ষক যারা ১৭তম গ্রেডে নিয়োগ প্রাপ্ত হন, তাদেরও ১৪তম গ্রেডে উত্তীর্ণ করা হয়।  ২০২০ সালে তাদেরও ১৩তম গ্রেড প্রদান করে প্রজ্ঞাপন জারী করে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যারা গৃহপালিত প্রাণীর চিকিৎসা প্রদান করেন তাদেরও ভাগ্য পরিবর্তন হয় কিন্তু সৃষ্টির সেরাজীব মানব শিশু স্বাস্থ্য ও মাতৃ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার পরও বৈষম্যের শিকার হয়ে তৃণমূল স্বাস্থ্য সহকারীদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি আজও।”

স্বাস্থ্য সহকারীদের নেতারা জানান, স্বাস্থ্য সহকারীরা প্রকৃত পক্ষে ডির্পাটমেটাল একটা প্রতারনার শিকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের  কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন এবং দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কর্মকর্তারা তাদের কথা রাখেননি। 

তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে আও বলেন, “আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই আমাদের গৌরবের প্রতিক এ মনিপতাকা গায়ে জরি আজ শহিদ মিনারে ন্যায্য অধিকার নিয়ে অবস্থান কর্মবিরতিতে এসেছি। এটার কিন্তু আমাদের দাবি না কর্মকর্তাদের দীর্ঘ দিনের আশ্রাস ও প্রতিশ্রুতি। আমাদের যৌক্তিক ৬ দফা দাবি জিও (প্রজ্ঞাপন) আকারে প্রকাশ না হওয়ার পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব। প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসুচিতে যেতে বাধ্য হবেন। এমকি এখানে আত্মহতি দিবেন এবং সকলে মনিপাতা দিয়ে দাফন হবেন।”

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

চকবাজারের আবাসিক ভবনে আগুন
হেলথ অ্যান্ড হোপে ডে–কেয়ার সেন্টার শুরু
তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে স্বাস্থ্য সহকারীরা: বন্ধ টিকাদন কর্মসূচি
আচরণবিধি লঙ্ঘনে ‘তাৎক্ষণিক প্রার্থিতা বাতিলের’ হুঁশিয়ারি ইসির
ডা. জাহিদের বক্তব্য ছাড়া খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তথ্য প্রকাশ না করার আহ্বান বিএনপির
খালেদা জিয়ার অবস্থা্ ‘খুব ক্রিটিক্যাল’, জানালেন বিএনপি নেতা আজম খান
একনেক বৈঠকে ১৬ হাজার ৩২ কোটি টাকার ১৮ প্রকল্প অনুমোদন
পূর্বাচল প্লট বরাদ্দ জালিয়াতি মামলা; কেন আইনজীবী পাননি হাসিনা-রেহানা-টিউলিপ?
এবার বিএনপিতে রেজা কিবরিয়া: ৭ বছরে ৩ বার দল বদল
ভেন্টিলেশন সাপোর্টে খালেদা জিয়া
রেহানার প্লটের বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশ
শেখ হাসিনার পাঁচ, শেখ রেহানার সাত, টিউলিপের দুই বছরের কারাদণ্ড
‘আর.ভি ড. ফ্রিডটজফ নানসেন’ জরিপ; বঙ্গোপসাগরে ৬৫ নতুন প্রজাতির মাছ, বাংলাদেশ অংশেই ৫ প্রজাতি
অবৈধ আহরণে সমুদ্রে কমে যাচ্ছে মাছ: ফরিদা আখতার
খালেদা জিয়ার সুস্থতায় ঢাবিতে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল
বিএনপির হাতেই দেশের সার্বভৌমত্ব: মির্জা আব্বাস
১৭০ আসনে জেএসডির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ: দেখে নিন প্রার্থী কারা
ছাদে দুই কিশোর, বন্ধ মেট্রোরেল চলাচল
সরকারি প্লট বরাদ্দ দুর্নীতি মামলা : শেখ হাসিনা, রেহানা ও টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলার রায় সোমবার
হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিলো: তদন্ত কমিশন