এবার বিএনপিতে রেজা কিবরিয়া: ৭ বছরে ৩ বার দল বদল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:১১, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুল তুলে দিয়ে তিনি বিএনপিতে যোগদান সম্পন্ন করেন।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ড. রেজা কিবরিয়া গণফোরাম–নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ–১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক অবস্থান ও কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন।
দল বদলের জন্য আলোচিত তিনি
বারবার দল বদলের জন্য বেশ আলোচিত রেজা কিবরিয়া। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যোগ দেন তিনি। যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে ব্যাপক পরিচিতি পান। গণফোরামের কেন্দ্রীয় পদেও আসীন হন তিনি।
পরবর্তীতে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, নেতৃত্ব সংকট ও মতপার্থক্যের কারণে গণফোরাম ছাড়েন রেজা কিবরিয়া। ২০২১ সালে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গঠিত গণঅধিকার পরিষদে যোগ দেন এবং দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
নতুন প্রজন্মমুখী রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সক্রিয় থাকলেও দলটি পরবর্তীতে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। এই সময়ে রেজা কিবরিয়া ও নুরের মধ্যে মতবিরোধ তীব্র হয়, যা শেষ পর্যন্ত দ্বিধাবিভক্তির দিকে নিয়ে যায়। গণঅধিকার পরিষদ ছাড়েন রেজা কিবরিয়া।
সবশেষে আজ ১ ডিসেম্বর গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন।
রেজাকে স্বাগত বিএনপির
রেজা কিবরিয়াকে স্বাগত জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশের একজন অত্যন্ত বিশিষ্ট সন্তান আজ আমাদের দলে যোগ দিলেন। আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং দেশের রাজনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকা—সব মিলিয়ে তিনি বিএনপির আগামীর পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও তাকে স্বাগত জানাই।”
বিএনপিতে যোগদানের পর রেজা কিবরিয়া বলেন, “আমি আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলাম এবং আমি গর্বিত। এই দলের ইতিহাসই হলো গণতন্ত্রের ইতিহাস। দুইবার এই দল গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাত থেকে।"
তিনি আরও বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার রাজনৈতিক আদর্শ। তার সাহস, সততা ও ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশে এখনো অনুপ্রেরণা। এত বছর পরও গ্রামের সাধারণ মানুষ তার নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করে—এটাই তাঁর মহত্বের প্রমাণ।”
জিয়ার ঐতিহাসিক ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একবার শেখ মুজিবের আমলে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছিল, যা জিয়াউর রহমান রক্ষা করেন। দ্বিতীয়বার শেখ হাসিনা ও এরশাদের সময়ে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছিল; তখন বেগম খালেদা জিয়া তা রক্ষা করেন। এ কারণেই আমি বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি।”
রেজা কিবরিয়া আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়তে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগাতে পারবেন।
