শেখ হাসিনার পাঁচ, শেখ রেহানার সাত, টিউলিপের দুই বছরের কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৭, ১ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৫৪, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিক
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছর এবং তার বোন শেখ রেহানাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এই মামলায় শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্য ১৪ জন আসামির প্রত্যেকে পেয়েছেন পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড। তারা হলেন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাবেক সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার এবং সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম, সাবেক উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ ও সাবেক সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
সোমবার (১ ডিসেম্বের) মো. রবিউল আলমের ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলাটির ১৭ জন আসামির মধ্যে খুরশীদ আলম আদালতে হাজির ছিলেন। অন্যদের পলাতক দেখিয়ে বিচার শেষ করেছেন আদালত।
পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের আওতায় প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা সমন্বিত জেলা অফিস-১-এ ছয়টি পৃথক মামলা করে দুদক। এর মধ্যে চারটিতে শেখ হাসিনাকে কারাদণ্ড দেওয়া হলো। তিনি বর্তমানে ভারতে রয়েছেন।
শেখ হাসিনা, ভাগ্নি আজমিনা সিদ্দিক ও টিউলিপ সিদ্দিক এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে আরও দুটি দুর্নীতি মামলার বিচার একই আদালতে বিচারাধীন। মামলার রায় আগামী বছরের জানুয়ারিতে পাওয়ার আশা করছেন প্রসিকিউশন।
২৫ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ছয়টি অভিযোগপত্র দাখিল করে। ছয়টি মামলাতেই হাসিনাকে সাধারণ আসামি করা হয়েছে। পরে ৩১ জুলাই হাসিনা, রেহানা, জয়, পুতুল, ববি, টিউলিপ এবং আজমিনাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
দুদকের অভিযোগ, রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে শেখ হাসিনা তার ছেলে জয়, পুতুল, বোন শেখ রেহানা, তার ছেলে ববি এবং মেয়ে আজমিনার জন্য পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক অঞ্চলে অবৈধভাবে ১০ কাঠার ছয়টি প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়েছেন। যদিও বিদ্যমান বিধি অনুসারে তারা এর যোগ্য ছিলেন না।
আর এই মামলাটিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপির ক্ষমতা ব্যবহার করে মা শেখ রেহানা, বোন আজমিনা সিদ্দিক ও ভাই রাদওয়ান মুজিবের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেন। ওই তিনজনও পূর্বাচলে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন।
তবে এ মামলায় শুধু রেহানার প্লট পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। যে কারণে এ মামলায় আজমিনা ও রাদওয়ানকে আসামি করেনি দুদক। দুজনকে অন্য দুটি মামলায় আসামি করেছে সংস্থাটি।
২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে তিনটি মামলায় সাত বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পৃথক দুটি মামলায় জয় ও পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
ওই তিন মামলায় শরীফ, ওয়াছি, পূরবী, আনিছুর, নাসির, সামসুদ্দিন ও খুরশীদকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর তিনটি মামলাতেই সাইফুলকে খালাস দেওয়া হয়। সালাহউদ্দিন, তন্ময়, নুরুল ও নায়েব আলীকে দুটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়, এবং মাজহারুলকে একটি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
