জোটগতভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা সিপিবির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:০৪, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:৪০, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্দলীয় রূপে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে তারা।
তিন দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির সভা শেষে শনিবার (২৫ অক্টোবর) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি এই তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্দলীয় রূপে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ক্ষমতাসীন জোটে থাকা যেকোনো রাজনৈতিক দলের পরামর্শক, পৃষ্ঠপোষক বা দলীয় পরিচয়ে পরিচিত ব্যক্তিদের পদত্যাগ করতে হবে, যাতে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়— জাতীয় নির্বাচনে সিপিবি ও তার নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল জোটসহ অন্যান্য বাম দল, সংগঠন ও প্রগতিশীল শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দলটি।
সভায় ‘জনতার সনদ’ নামে একটি অঙ্গীকারনামা প্রণয়নেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা সিপিবি সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনকালীন প্রচারে তুলে ধরবেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন। সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন রাজনৈতিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন, যা পরে আলোচনা শেষে গৃহীত হয়।
সভায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রফিকুজ্জামান লায়েক, এস এ রশীদ, জলি তালুকদারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
রিপোর্টে বলা হয়, সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে এবং তা ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। এ ভিত্তিতে সংবিধানের চার মূলনীতি প্রশ্নে আপসের কোনো সুযোগ নেই।
সভায় আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো এখতিয়ার নেই গণভোট আয়োজন বা সাংবিধানিক আদেশ জারি করার বিষয়ে, যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়নি।
সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভা থেকে তিনটি বন্দর টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা ও দেশের ভূখণ্ডকে আঞ্চলিক শক্তির ‘প্রক্সি যুদ্ধের’ ময়দানে পরিণত করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
দলটি আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে বামপন্থি ও গণতান্ত্রিক শক্তির সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হবে।
এ ছাড়া রাজনৈতিক ঐক্য সম্প্রসারণে কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে— ৩১ অক্টোবর: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর: গ্রামীণ ও নগর শ্রমজীবী মানুষের কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর: নারী সমাজের রাজনৈতিক কনভেনশন ও ১৩ ডিসেম্বর: মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ।
সভা থেকে বলা হয়, কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি ও উগ্র ডানপন্থি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর আস্ফালন রুখতে গণমানুষের ঐক্য ও সংগ্রামের বিকল্প নেই।
