হামলার প্রতিবাদ ও তিন দফার দাবিতে
জুলাইযোদ্ধাদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:৪০, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

পুলিশের হামলার প্রতিবাদ ও তিন দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন জুলাই যোদ্ধারা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী রবিবার (১৯ অক্টোবর) দেশের প্রতিটি জেলায় তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করবেন তারা।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংসদ ভবন এলাকায় সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন জুলাইযোদ্ধা সংসদের মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা সৌরভ।
এর আগে দুপুরের দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেওয়া জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় জুলাইযোদ্ধারা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে। পরে জুলাই যোদ্ধারা মানিক মিয়া এভিনিউ সড়কে অগ্নি সংযোগ করে।
কর্মসূচি ঘোষণার সময় মাসুদ রানা সৌরভ বলেন, আমরা হামলার শিকার হয়েছি। সেই হামলার প্রতিবাদে এবং এই সরকারের সময়েই আমাদের তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে রবিবার দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রত্যেক জেলা শহরের মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। আমরা অবরোধ কর্মসূচিতে জুলাই আহতদের পাশাপাশি, দেশের সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ কামনা করছি। যদি আমরা আমাদের জীবন ও রক্তের স্বীকৃতি আদায় করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতে আর এ রাষ্ট্রে বিপ্লবী জন্ম নেবে না।
তিন দফার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ এবং আহত-পঙ্গুত্ববরণকারীদের ‘বীর’ স্বীকৃতি দিয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে, জুলাই আহত ও শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে এবং আমাদের জন্য দায়মুক্তি দিয়ে সুরক্ষা আইন করতে হবে। যাতে আমাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত হয়রানি করা না হয়।
জুলাইযোদ্ধা সংসদের এই নেতা জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতির বক্তব্যের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষরিত সনদের মধ্যে বিরোধ আছে। উনি জুলাই আহত এবং শহীদ পরিবারকে আইনি নিরাপত্তার যে কথা বলেছেন, সেটি পাঁচ নম্বর ধারায় উল্লেখ নেই।
তিনি বলেন, আমরা বিগত এক মাসে সরকারের নানা পর্যায়ে দাবিগুলো নিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, কিন্তু জুলাইয়ের চূড়ান্ত খসড়ায় আমাদের ন্যায্য দাবি সনদে সংযোজিত হয়নি। তাই আমরা সংসদ ভবনের গেটে অবস্থান নিই। আমরা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সময় দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেছি, কিন্তু সরকার আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় আসেনি।
মাসুদ রানা সৌরভ জানান, তারা সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মঞ্চে অবস্থান নেন। তিন মিনিটের মধ্যে সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে বসিয়ে দিতে সক্ষম হন। কারো কোনো ব্যাঘাত হয়নি। সাড়ে ১২টার দিকে ঐকমত্য কমিশনের প্রতিনিধিদল আসে, তখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ ছিলেন। জুলাই যোদ্ধারা তার সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি পাঁচ নম্বর ধারা ঘোষণা করে চলে যান। কিন্তু তিনি বাস্তবায়নের ব্যাপারে কিছু বলেননি।
এই জুলাই যোদ্ধা নেতা বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলেছি- আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্য তিন মিনিট সময় দেন। ওনারা সময় দেননি। তারা পশ্চিম পাশ থেকে আক্রমণ শুরু করেন। আমি তখন পশ্চিম পাশে দাঁড়ানো। ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরাও অনুরোধ করেন, তাদের সময় দিন। কিন্তু তারা সময় না দিয়ে এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা, বুট দিয়ে পাড়ানো শুরু করে। তারা আমাদের এমনভাবে নির্যাতন চালিয়েছে, যেন এ রাষ্ট্রের জন্য আমরা বিশেষ যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছি। আমাদেরকে দমন করাই যেন তাদের কাজ। আমরা এমন হামলার নিন্দা জানাই।