তারেক রহমানের ফেরা না ফেরায়, বিএনপি কি খাদের কিনারায়
প্রকাশ: ১৭:০২, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
কবির য়াহমদ
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদের কথাকে আমলে নিলে বলা যায়, তারেক রহমানের বৈধ কোনো পাসপোর্ট নাই। উনি পাসপোর্ট নবায়ন করাননি, অথবা এর আগ্রহ প্রকাশ করেননি। নবায়ন করতে চাইলে সরকার এখানে ‘না’ করতে পারত না। কারণ বর্তমান স্ট্য্যাটাস যাই হোক, বিএনপির এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাংলাদেশের নাগরিক।
তাহলে কেন এতদিন আসি-আসি করছিলেন। এখন যখন দেশে ফেরা তার পারিবারিক-সামাজিক ও নৈতিক আবশ্যিকতা হয়ে পড়ল, তখন বলছেন, ফেরার সিদ্ধান্ত আমার কাছে নাই।
দেশে ফেরা তার কার কাছে? ইন্টেরিম সরকার নিশ্চিত করছে তারা ফিরতে বাধা নয়। সরকার এমনকি ‘ওয়ান টাইম ট্রাভেল পাস’ দিয়ে তারেক রহমানের পাশে দাঁড়াতে চায়, তবু তিনি সাড়া দিচ্ছেন না কেন?
নিরাপত্তাহীনতা অবান্তর আলাপ। তার জন্যে বুলেটপ্রুফ গাড়ির অনুমতি মিলেছে। ব্যক্তিগত-দলীয় ও সরকারি নিরাপত্তা থাকবে তার জন্যে। তার পরেও না আসার সিদ্ধান্তে প্রশ্ন দাঁড়ায়—আসলে কী উদ্দেশ্য, কী পরিকল্পনা তার?
তিনি কি প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাওয়ার পর আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী হলে তো প্রথমে তার দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে; সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তো নির্বাচন হতে হবে; নির্বাচন হতে হলে তো তাকে প্রার্থী হতে হবে; প্রার্থী হতে হলে তো তাকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে; জমা দিতে হলে তো সশরীর উপস্থিতি থাকতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা নিতে তো ইসির কেউ লন্ডনে উড়ে যাবে না। তাহলে কীভাবে কী হবে!
তারেক রহমানের না ফেরার সিদ্ধান্ত, অথবা ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে না পারা মূলত বিএনপিকে খাদের কিনারায় নিয়ে এসেছে। এখন তাকে নিয়ে তাই নেতিবাচক চর্চা হবে। এই সুযোগ ছাড়বে না জামায়াত। এরই মধ্যে তারা শুরুও করে দিয়েছে।
আমরা চোখের সামনে দেখছি ক্ষমতায় যাওয়ার আগে কীভাবে ক্ষমতাচ্যুত হতে যাচ্ছে বিএনপি। তারেক রহমানের দেশে না ফেরার একটা সিদ্ধান্তে প্রতিশ্রুতিশীল একটা দলের অকালমৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ তাদের শাসনামলের পুরোটা সময় বিএনপির প্রতি টিপ্পনী কেটে বলতো, তোমাদের নেতা কে, প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? তাদের সেই টিপ্পনী কি এখন রূঢ় বাস্তবতা নয়?
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট
* মতামত লেখকের নিজস্ব
