জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সরব ছিলেন না উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:৩০, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০৩:৫৫, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সরব উপস্থিতি ছিল না অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের। অন্যান্য উপদেষ্টাদের মতো তাদের সরব দেখা যায়নি। সামনের সারিতে বসেননি। এমনকি সরাসরি সম্প্রচার করা টেলিভিশন ক্যামেরার সামনেও দেখা যায়নি তাদের। সাংবাদিকদের চোখেও পড়েননি তারা।
এর মধ্যে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে টেলিভিশন ক্যামেরায় একঝলক অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত জুলাই শহীদ মুগ্ধর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। তবে অন্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে তাও দেখা যায়নি।
শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা বেগম জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার অবশ্য জানান, এই দুই উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনি অনুষ্ঠানে তাদের পাশেই বসেছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারে স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন মাহফুজ আলম।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অনুষ্ঠানমঞ্চে আসেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন— ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (অর্থ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ (পরিকল্পনা), ড. আসিফ নজরুল (আইন ও প্রবাসীকল্যাণ), মো. তৌহিদ হোসেন (পররাষ্ট্র), আদিলুর রহমান খান (শিল্প ও গৃহায়ন), আলী ইমাম মজুমদার (খাদ্য ও ভূমি), অধ্যাপক ড. সি আর আবরার (শিক্ষা), মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান (বিদ্যুৎ, সড়ক ও রেলপথ), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (পরিবেশ ও পানি সম্পদ)।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক (মুক্তিযুদ্ধ ও ত্রাণ), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন (নৌ ও শ্রম), নূরজাহান বেগম (স্বাস্থ্য), অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার (প্রাথমিক শিক্ষা), ফরিদা আখতার (মৎস্য), শারমীন এস মুরশিদ (সমাজকল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক), ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন (ধর্ম), সুপ্রদীপ চাকমা (পার্বত্য চট্টগ্রাম), শেখ বশিরউদ্দীন (বাণিজ্য, বস্ত্র ও পর্যটন), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া), মো. মাহফুজ আলম (তথ্য ও সম্প্রচার) এবং মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (সংস্কৃতি বিষয়ক)।
মঞ্চে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকনসহ অনেককে দেখা গেছে।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এই সনদে স্বাক্ষর করে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ৬টি রাজনৈতিক দল সনদে সই করেনি।
জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা দলগুলো হলো—সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ জাসদ, এনসিপি এবং গণফোরাম। এই ৬টি দলের মধ্যে গণফোরামের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও সনদে স্বাক্ষর করেনি। এনসিপি-সহ বাকি পাঁচটি দলের কোন প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে আসেননি।
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা দল ও জোটগুলো হলো—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, আমজনতার দল, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও জাকের পার্টি।