রোববার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

| ৪ কার্তিক ১৪৩২

১ নভেম্বর থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪:২৩, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

১ নভেম্বর থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুমকি

বাংলাদেশের পোল্ট্রি খাত আবারও বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত করপোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে বাজার নিয়ন্ত্রণে না আনে, তাহলে আগামী ১ নভেম্বর থেকে সারাদেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন (বিপিএ)।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন,‘আমরা সান্ত্বনার ভেতরে নয়, ন্যায্যতার ভেতরে থাকতে চাই। সরকার যদি প্রান্তিক খামারিদের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে উৎপাদন স্থগিত ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ থাকবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, দেশের পোল্ট্রি শিল্প গত ১৬ বছর ধরে কয়েকটি বড় করপোরেট গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। এই গ্রুপগুলো ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)’ নামে একটি নিবন্ধনহীন ও বেআইনি সংগঠন গড়ে তুলেছে।

বিপিএর মতে, এই সংগঠনের কোনো সরকারি স্বীকৃতি বা তদারকি নেই, তবু তারা ফিড, বাচ্চা, টিকা ও ওষুধের দাম নির্ধারণে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করছে। এমনকি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়াতেও তাদের প্রভাব বিস্তৃত।

বিপিএ সভাপতি বলেন,‘অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা মাঠপর্যায়ের বাস্তব অবস্থা না জেনে কেবল করপোরেট গ্রুপের পরামর্শে কাজ করছেন। ফলে প্রকৃত খামারিরা বাজার থেকে একে একে হারিয়ে যাচ্ছেন।’

বিপিএর উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, ফিডের বাজারে ভয়াবহ অস্বচ্ছতা চলছে।২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের গবেষণায় দেখা গেছে—প্রতি কেজি ফিডে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত দাম নিচ্ছে করপোরেট কোম্পানিগুলো।

ভারত বা নেপালে যেখানে প্রতি কেজি ফিডের দাম ৩২–৪০ টাকা, সেখানে বাংলাদেশে তা ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে একটি ডিম উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১০ টাকা, আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ দাঁড়াচ্ছে ১৫০–১৬৫ টাকা।

বিপিএর ভাষায়, ‘সরকারের নীরব ভূমিকা এই সিন্ডিকেটকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার, সিনিয়র সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা।
 

আরও পড়ুন