স্বপ্ন দেখছেন ট্রাম্প
ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটি ধ্বংসের দাবিতে খামেনির কটাক্ষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ছবি: সংগৃহীত
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক দাবি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি ট্রাম্প মনে করেন যে জুন মাসে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে তিনি “স্বপ্ন দেখছেন”।
খামেনি তার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট গর্বের সঙ্গে বলছেন যে তারা ইরানের পারমাণবিক শিল্পে বোমা হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছেন। খুব ভালো, স্বপ্ন দেখতে থাকো।”
তিনি আরও জানান, ট্রাম্পের পুনরায় পারমাণবিক আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ, ১৩ জুন ইসরাইল ইসলামিক প্রজাতন্ত্রে হামলা চালানোর পর আলোচনাটি স্থগিত করা হয়েছিল। সেই ঘটনাই ১২ দিনের যুদ্ধের সূচনা ঘটায়। খামেনির দাবি—“যে চুক্তিতে জবরদস্তি বা হুমকি থাকে, তা কোনও চুক্তি নয়; বরং চাপিয়ে দেওয়া।”
অন্যদিকে, রবিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলার পর ইরান এখন আর মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতার কারণ নয়। তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা আমরা ধ্বংস করেছি।” তিনি এই অভিযানে “সবচেয়ে সুন্দর সামরিক অভিযান” বলে অভিহিত করেন।
তবে বাস্তব প্রভাব নিয়ে বিতর্ক আছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এক থেকে দুই বছর বিলম্বিত হতে পারে। কিন্তু মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি—এই প্রভাব সাময়িক, মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ইরান পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠছে।
তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নতুন করে আলোচনার পরিকল্পনা থাকলেও, এপ্রিল মাসে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের পর তা ভেস্তে যায়। ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার নিশ্চয়তা না দিলে কোনও আলোচনাই সম্ভব নয়।
২০১৫ সালে ইরান ও বিশ্বশক্তির মধ্যে হওয়া পরমাণু চুক্তি (JCPOA)-এর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হয়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, ২০১৮ সালে, যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়।
ইরান সরকার প্রকাশ্যে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কথা অস্বীকার করলেও, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন—তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যার কোনো শান্তিপূর্ণ প্রয়োগ দেখা যায়নি। তাছাড়া, আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদেরও অনেক স্থাপনায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।