বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

| ৬ কার্তিক ১৪৩২

ফেব্রুয়ারির মধ্যে উৎপাদন শুরু করার নির্দেশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের ছাদে হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০:৪১, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৪৩, ২১ অক্টোবর ২০২৫

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের ছাদে হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু

বিদ্যুৎ ভবনে তিন মন্ত্রণালয়ের ছয়টি বিভাগের সঙ্গে আলাদা করে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই অনুষ্ঠান। ছবি : পিআইডি

সারা দেশে সরকারি স্থাপনার ছাদ ব্যবহার করে দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর প্রথম ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ছাদে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে তিন মন্ত্রণালয়ের ছয়টি বিভাগের সঙ্গে আলাদা করে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যু্ৎ বিভাগ।

চুক্তি স্বাক্ষরিত ছয়টি বিভাগ হলো— মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ।

প্রত্যেক বিভাগের সচিব নিজ নিজ পক্ষ থেকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ছাদের সৌরপ্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। তারা ইতিমধ্যে ৪৬ হাজার ৮৫৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১,৪৫৪.৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করেছে।

দরপত্রে যে সংস্থা সর্বনিম্ন দামে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দেবে, তার সঙ্গেই চুক্তি হবে। ঠিকাদার নিজেই বিনিয়োগ করবে; প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক বা বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেও অর্থায়ন নিতে পারবে।

উৎপাদনের সময়সূচি ও নির্দেশনার বিষয়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে, ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যায়ন শেষে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি সই করতে হবে। অধিকাংশ প্রকল্পে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সময়মতো কাজ শেষ না হলে সংশ্লিষ্ট বিতরণ সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সৌরবিদ্যুৎ বসাতে জটিল প্রক্রিয়া নেই—এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, বাস্তবায়ন করতেই হবে।”

এই উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, “দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বছরে প্রায় ২০ কোটি ঘনফুট কমছে। এলএনজি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে প্রতি ইউনিটে ২০ টাকা খরচ হবে। শিল্পখাতে গ্যাসের দাম ৪০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যা অযৌক্তিক।”

উপদেষ্টা আরও বলেন, “শ্রীলঙ্কায় ৭৫ শতাংশ ও ভারতে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে। আমাদেরও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভর করতে হবে।”

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ সরকারের লক্ষ্য ও অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, “সরকারি ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন এখন জাতীয় কর্মসূচি। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এই চুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে সবুজ জ্বালানির পথে যাত্রা আরও বেগবান হবে।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে “জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি” প্রণয়ন করা হয়, যা গত ২৯ জুন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

এই সৌর বিদ্যুৎ বিতরণে জড়িত ছয়টি বিতরণ সংস্থা হলো- বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন