বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

| ৬ কার্তিক ১৪৩২

জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলে বিনা নোটিশে বন্ধ হবে গণমাধ্যমের পোর্টাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯:৪৫, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৫২, ২১ অক্টোবর ২০২৫

জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলে বিনা নোটিশে বন্ধ হবে গণমাধ্যমের পোর্টাল

বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক সভায় ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন জুয়া ও অনিরাপদ কনটেন্টের বিজ্ঞাপন বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একাধিকবার সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও বেশ কিছু অনলাইন গণমাধ্যমে এসব বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় বিনা নোটিশে পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় এ বক্তব্য দেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি জানান, সরকার গত পরশুদিন পর্যন্ত সময় দিয়েছিল পোর্টালগুলোকে এসব বিজ্ঞাপন সরাতে, কিন্তু অনেকেই তা মানেনি।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন,“গতকাল পর্যন্ত যে তালিকা আমাদের হাতে এসেছে, সেখানে যুগান্তর, ভোরের কাগজ, ইনকিলাব, মানবকণ্ঠ, জাগো নিউজ, বাংলাদেশ ২৪ অনলাইন, আওয়ার নিউজ ২৪সহ বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। আমরা যেকোনো মুহূর্তে এগুলো বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে, এখন আর আলাদা করে কিছু বলব না—সরাসরি বন্ধ করা হবে।”

সভায় ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, সরকার ওয়েব ক্রলিং (ইন্টারনেট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ) করে দেখেছে—কিছু এমএফএস (মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস) অ্যাকাউন্টের সঙ্গে জুয়ার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।

সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৪,৮২০টি এমএফএস নম্বর এবং ১,৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলো অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত।

তৈয়্যব বলেন,“একটা নম্বর ব্লক করলেই তারা নতুন নম্বর নিয়ে আসে। ওয়েবসাইটের নাম বা আইপি একটু পাল্টে নতুন করে চালু করে দেয়। এমনকি এখন তারা এপিকে ফরম্যাটে অ্যাপ বানিয়ে চালাচ্ছে, যেগুলো প্লে-স্টোরে প্রকাশিতও নয়।”

তিনি প্রস্তাব দেন—আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এসব গ্রুপে ‘প্লেয়ার’ হিসেবে যুক্ত করা উচিত, যাতে ভেতর থেকে জুয়া পরিচালনাকারীদের শনাক্ত করা যায়।

দেশে অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিআরসি, গোয়েন্দা সংস্থা, বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ এককভাবে সম্ভব নয়। সরকার কঠোর অবস্থানে আছে, কিন্তু নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকেও দায়িত্ব নিতে হবে।”

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন