মোবাইল ফোন খাতে এনইআইআর চালুর দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:৩৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২১:০৯, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এনইআইআর চালুর দাবি। গ্রাফিক্স: সমাজকাল
মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও বৈধতা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) দ্রুত চালুর আহ্বান জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। সংগঠনটির দাবি, এ ব্যবস্থা কার্যকর হলে সরকার প্রতিবছর হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জন করবে, পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানও বাড়বে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় এমআইওবি।
সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহিদ বলেন, এনইআইআর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপত্তাব্যবস্থা। বহু দেশে এটি কার্যকর রয়েছে। বাংলাদেশে চালু হলে অবৈধ, চোরাই, কপি বা রিফারবিশড ফোনের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। একই সঙ্গে একই আইএমইআই নম্বর ব্যবহার করে একাধিক ফোন সচল থাকার মতো বড় নিরাপত্তা ঝুঁকিও দূর হবে।
তিনি জানান, লাগেজ বা ‘পার্টি’ করে দেশে আনা বিপুলসংখ্যক মোবাইল ফোন করমুক্তভাবে বাজারে বিক্রি হয়। এসব ফোনের কোনো অনুমোদন না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বৈধ ব্যবসায়ীরা; হারাচ্ছে সরকারের রাজস্বও। এনইআইআর হলে অবৈধ ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেটওয়ার্কে বন্ধ হয়ে যাবে, চুরি বা হারানো ফোন শনাক্ত করা সহজ হবে এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা আরও মজবুত হবে। তাঁর দাবি, এ ব্যবস্থায় সরকার বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পেতে পারে।
এমআইওবির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, বর্তমানে দেশে স্যামসাং, শাওমি, অপ্পোসহ ১৮টি কারখানায় মোবাইল ফোন উৎপাদন হচ্ছে। গ্রে মার্কেট সক্রিয় থাকায় এসব দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিনিয়োগ কমে যায় এবং কর্মসংস্থানও সংকুচিত হয়। এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে দেশীয় উৎপাদন আরও সম্প্রসারিত হবে।
বিদেশি ফোন ব্যবসায়ীদের ট্যাক্স কাঠামো কমানো বা লাইসেন্স ও বিটিআরসির এনওসি প্রক্রিয়া সহজ করার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, বাজার উন্মুক্ত—যে কেউ নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে পারে। ‘সিন্ডিকেট’ সংক্রান্ত অভিযোগও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিটিআরসির তথ্য তুলে ধরে জহিরুল ইসলাম জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর কার্যকর হবে। তার আগে নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব বৈধ ও অবৈধ ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত থাকবে। এরপর নতুনভাবে অনুমোদনহীন ফোন আর নেটওয়ার্কে সচল হবে না।
তিনি বলেন, এনইআইআর চালুর ফলে পুরো খাতে শৃঙ্খলা আসবে, রাজস্ব বাড়বে এবং মোবাইল শিল্প আরও শক্তিশালী হবে। এটি শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং পুরো ইকোসিস্টেমকে স্বচ্ছ ও টেকসই করতে সময়োপযোগী উদ্যোগ।
সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবির ইসি সদস্য ইমাম উদ্দিন, রেজওয়ানুল হক, জিয়া উদ্দিন চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
