সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

| ৫ কার্তিক ১৪৩২

ট্রাম্পোর হুমকি

রুশ তেল না কমালে ভারতকে ‘ভয়ংকর শুল্ক’ দিতে হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:২৪, ২০ অক্টোবর ২০২৫

রুশ তেল না কমালে ভারতকে ‘ভয়ংকর শুল্ক’ দিতে হবে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতের ওপর চাপ বাড়িয়ে জানিয়েছেন—রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখলে নয়াদিল্লিকে ‘ভয়াবহ’ হারে শুল্ক দিতে হবে। ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত “রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে তিনি ভাববেন।”

রবিবার এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন,“আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, তিনি রুশ তেল আর আনছেন না।’ 

কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে—তারা এমন কোনো কথোপকথনের বিষয়ে অবগত নয়। অর্থাৎ, মোদি-ট্রাম্পের মধ্যে রুশ তেল প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আলোচনার বিষয়টি নয়াদিল্লি অস্বীকার করেছে।

রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকেই ভারত তুলনামূলক কম দামে রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করছে। বর্তমানে ভারতের মোট তেল

আমদানির প্রায় এক-চতুর্থাংশই রাশিয়া থেকে আসে। ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে, এই তেলবাণিজ্যই রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আর্থিক জোগান তৈরি করছে।
ট্রাম্প স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—যদি ভারত এই আমদানি বন্ধ না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যের ওপর আগের মতোই অতিমাত্রায় উচ্চ শুল্ক আরোপ করে রাখবে। 

তিনি বলেন,“যদি তারা বলতে চায় আমরা কথা বলিনি, তাহলে তারা বিশাল শুল্ক দিতে থাকবে—তারা সেটা চাইবে না।”

নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ট্রাম্পের কোনো সাম্প্রতিক ফোনালাপ বা আলোচনার খবর জানে না। ভারতের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটির জ্বালানি কৌশল সম্পূর্ণরূপে “জাতীয় স্বার্থ” নির্ভর, এবং কোথা থেকে তেল কেনা হবে, তা নির্ধারণ করবে ভারত নিজের চাহিদা অনুযায়ী।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক চাপের ফলে ভারত ইতিমধ্যে রুশ তেল আমদানিতে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কাটছাঁট করেছে বলে ওয়াশিংটনের দাবি। কিন্তু ভারতীয় তেল সংস্থাগুলোর অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, এখনো এমন কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশ জারি হয়নি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের নানা রপ্তানি পণ্যের ওপর প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে। এই অর্থনৈতিক চাপ ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ভারতের রুশ তেল নির্ভরতা কমানোর উপায়।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি শুধু অর্থনৈতিক নয়—এটি এক গভীর কূটনৈতিক টানাপোড়েন, যা ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্ককে নতুন করে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

আগামী সপ্তাহগুলোতে দেখা যাবে—ভারত সত্যিই রুশ তেল আমদানি হ্রাস করে কি না, নাকি নিজেদের “জ্বালানি স্বাধীনতা” বজায় রাখে। একইসঙ্গে নজর থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন করে শুল্ক আরোপ হয় কি না এবং এই ইস্যু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন