সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

| ৫ কার্তিক ১৪৩২

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক

নির্বাচনের আগে-পরে শান্তি বজায় রাখার বিশেষ নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪:৪৮, ২০ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচনের আগে-পরে শান্তি বজায় রাখার বিশেষ নির্দেশনা

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে ও পরে সমগ্র দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী নিরাপত্তা, সামাজিক সম্প্রীতি, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। এতে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইসি জানায়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটগ্রহণ শেষে কয়েক দিন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম পুলিশ ও সচিবদেরও এ কাজে সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হবে।

বৈঠকে বলা হয়, নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। কেউ যাতে অন্তর্ঘাতমূলক বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি চালানো হবে।

সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচনী এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, ব্যবহার রোধ ও বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা জারি করার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো রোধে বিশেষ কৌশল নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইসি। কমিশনের ভাষায়, “ভুল তথ্যের প্রচারণা যেন সহিংসতা উসকে না দেয়, আস্থা বিনষ্ট না করে, সে বিষয়ে সবাইকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগত বিদেশি প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও প্রাক-পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রবাসী ও যোগ্য ভোটারদের ডাকযোগে ভোটদানের (পোস্টাল ভোটিং) ক্ষেত্রে ব্যালট পেপার নিরাপদে প্রেরণ ও ফেরত আসার সময় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়।

বৈঠকের সারসংক্ষেপে ইসি জানায়, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রশাসন, পুলিশ, সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে নিবিড় সমন্বয় বজায় রাখা হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান, সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, নৌ-বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বিমান বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি এয়ার ভাইস মার্শাল রুশাদ দিন আসাদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, এনএসআই মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ, ডিজিএফআই মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি অফিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়াল এডমিরাল জিয়াউল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, এসবি অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও অর্থ) জি এম আজিজুর রহমান ও সিআইডি অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ছিবগাত উল্ল্যাহ।

আরও পড়ুন