ট্রাম্পের সেনা মোতায়েন পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১০:৪৭, ২৪ আগস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ড সেনা পাঠানোর পরিকল্পনাকে “ক্ষমতার অপব্যবহার” বলে আখ্যায়িত করেছেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট গভর্নর জে বি প্রিটজকার। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “ইলিনয়ে এমন কোনো জরুরি অবস্থা নেই যা ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের দাবি রাখে। প্রেসিডেন্ট কৃত্রিমভাবে একটি সংকট তৈরি করতে চাইছেন।”
শিকাগো ও নিউইয়র্কে সেনা পাঠানোর ঘোষণা
ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রায় ২,০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন। শুক্রবার তিনি ঘোষণা দেন, শিকাগো ও নিউইয়র্কেও একই পদক্ষেপ নেবেন। তবে শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন জানিয়েছেন, সেনা মোতায়েন নিয়ে তাকে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তিনি এ পদক্ষেপকে “অযৌক্তিক, সমন্বয়হীন ও অকার্যকর” আখ্যা দেন এবং সতর্ক করেন, এটি স্থানীয় জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
ওয়াশিংটনে সেনাদের অস্ত্রধারণ
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ নির্দেশ দিয়েছেন, ওয়াশিংটনে মোতায়েন ন্যাশনাল গার্ড সেনারা এবার থেকে সরকারি অস্ত্র নিয়ে টহল দেবেন। এর আগে পেন্টাগন জানিয়েছিল, সেনারা নিরস্ত্র অবস্থায় দায়িত্ব পালন করবেন। সেনারা এখনো সরাসরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অংশ নেয়নি, বরং ন্যাশনাল মল ও ইউনিয়ন স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন রয়েছে।
ওয়াশিংটনের মেয়র মুরিয়েল বাউসার এ সিদ্ধান্তে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। তবে স্থানীয় জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীর বাসিন্দাদের প্রায় ৮০% এই মোতায়েনের বিরোধিতা করছেন।
ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ওয়াশিংটনে সেনা মোতায়েনের কারণে শহর এখন “পুরোপুরি নিরাপদ”। তিনি শিকাগোতেও একই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ইঙ্গিত দেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, “ডিসি ছিল নরককুণ্ড, এখন নিরাপদ। প্রয়োজনে আমি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করব এবং যতদিন চাই সেনারা সেখানে থাকবে।”
তিনি আরও জানান, আগামী সপ্তাহগুলোতে ১৯টি অঙ্গরাজ্যে ১,৭০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হবে। টেক্সাসে সবচেয়ে বেশি সেনা থাকবে এবং তারা আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কার্যক্রমেও সহায়তা করবে।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ওয়াশিংটনে অপরাধের হার ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। মেয়র বাউসার জানান, “বড় ধরনের অপরাধ অনেক কমেছে।” তবুও ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এই সেনা অভিযানেই ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৯১টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপে, ওয়াশিংটন ডিসির পর এবার শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। ডেমোক্র্যাট গভর্নর ও মেয়ররা একে “ক্ষমতার অপব্যবহার” হিসেবে দেখছেন, আর ট্রাম্প এটিকে অপরাধ দমনের সফল অভিযান বলে দাবি করছেন।