দিনের বিশেষ সময়ে বাড়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি
স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৩৮, ২৭ আগস্ট ২০২৫

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে প্রায় ১ কোটি ৯৮ লক্ষ মানুষ হৃদ্রোগে প্রাণ হারিয়েছেন। যা বিশ্বজুড়ে মোট মৃত্যুর প্রায় ৩২ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ মৃত্যু ঘটেছে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের কারণে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাক মূলত ঘটে তখনই, যখন হৃদ্যন্ত্রে রক্ত ও অক্সিজেন বহনকারী ধমনীতে হঠাৎ বাধা সৃষ্টি হয় কিংবা যথেষ্ট অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়। কিন্তু জানেন কি দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি থাকে?
কেন সকালকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়?
চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে।
রক্তচাপ দ্রুত বাড়তে শুরু করে।
কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়।
রক্তের প্লেটলেট বেশি আঠালো হয়ে ওঠে, ফলে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই পরিবর্তনগুলো হৃদ্যন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এবং সকালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
কোন সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি?
গবেষণা অনুযায়ী—
সকাল ৭টা থেকে ১১টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাক ও হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঘটনা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
বিকেল ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সময় হিসেবে চিহ্নিত।
চিকিৎসকদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর স্বাভাবিকভাবেই এক ধরনের চাপের মুখে থাকে। এই অতিরিক্ত চাপই হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
সকালের ভুল অভ্যাস যা বাড়ায় বিপদ
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সকালের কিছু সাধারণ অভ্যাস হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়—
ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে কফি খাওয়া।
পানি না খাওয়া।
নিয়মিত ওষুধ না খাওয়া।
ঘুম থেকে উঠেই সরাসরি ভারী কাজের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়া।
এসব আচরণ হৃদ্যন্ত্রকে বাড়তি ঝুঁকির মুখে ফেলে।
কীভাবে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—
ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে এক গ্লাস পানি পান করুন।
নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন।
প্রোটিনসমৃদ্ধ হালকা প্রাতঃরাশ করুন।
এরপর ১০-১৫ মিনিট হালকা হাঁটাহাঁটি বা শরীরচর্চা করা যেতে পারে।
ধীরে ধীরে দিনের কাজ শুরু করাই শ্রেয়।
চিকিৎসকদের মতে, সকালে হঠাৎ করে জীবনযাত্রার গতি বাড়ানো মানেই হৃদ্যন্ত্রকে অযথা চাপে ফেলে দেওয়া। তাই সকালের অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তনই হৃদ্যন্ত্রকে রাখতে পারে সুরক্ষিত।