৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:১২, ২১ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৩৫, ২১ আগস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
কেন ভিসা বাতিল?
প্রধানত দুই কারণে এসব ভিসা বাতিল হয়েছে—
১. আইন ভঙ্গের অভিযোগে: নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, হামলা, চুরি ইত্যাদি অপরাধ।
২. ‘আইএনএ ৩বি’ ধারায় অভিযোগে: অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকা বা সহায়তা করার অভিযোগ। এই ধারা অনুযায়ী, যেকোনো কার্যকলাপ যা মানুষের জীবন বা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি, তা সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড হিসেবে গণ্য হয়।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, মোট ভিসা বাতিলের মধ্যে প্রায় চার হাজার ভিসা আইন ভঙ্গের কারণে এবং ২০০–৩০০ ভিসা সন্ত্রাসবাদ–সংক্রান্ত অভিযোগে বাতিল হয়েছে। তবে “সন্ত্রাসবাদে সহায়তা” বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, যাঁরা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করেছেন। সরকারের দাবি, এই বিক্ষোভে ইহুদিবিদ্বেষী আচরণ দেখা গেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কংগ্রেসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন—
“জানুয়ারি থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সম্ভবত আরও অনেক ভিসা বাতিল করতে হবে। যাঁরা অতিথি হয়ে এসে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন, তাঁদের ভিসা বাতিল করা হবে।”
অতিরিক্ত কঠোরতা
চলতি বছর ভিসা সাক্ষাৎকারের সময়সূচি স্থগিত করা হয়েছিল।
জুনে সাক্ষাৎকার চালু হলেও আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট পাবলিক রাখতে বাধ্য করা হয়।
ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে কোনো পোস্টে যুক্তরাষ্ট্র বা এর সংস্কৃতি, নীতি, সরকারবিরোধী ইঙ্গিত আছে কি না, তা যাচাই করা হয়।
সমালোচনা
বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটরা এই পদক্ষেপকে ন্যায্য প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আঘাত হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের টার্গেট করা হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রেক্ষাপট
‘ওপেন ডোরস’ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে ২১০টির বেশি দেশ থেকে ১১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি হয়েছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন এক অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বিশেষ করে মুসলিম ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা ভিসা পাওয়া ও ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাড়তি চাপে পড়তে পারেন।