ইউক্রেন যুদ্ধবন্ধে পুতিনকে আগ্রহী মনে হচ্ছে না
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:৩৩, ১৯ আগস্ট ২০২৫

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে না। তবে একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তি চুক্তি নিয়ে যে আশাবাদ দেখাচ্ছেন, তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত।
মঙ্গলবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘পরিস্থিতি ও বাস্তবতার দিকে তাকালে আমি পুতিনকে শান্তির জন্য খুব একটা আগ্রহী দেখি না। তবে হয়তো আমি বেশি হতাশাবাদী হয়ে পড়ছি।’
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ম্যাক্রোঁ স্পষ্টভাবে জানান, যুদ্ধের দায়ভার রাশিয়ার এবং এ অবস্থায় ইউক্রেনের সঙ্গে তাদের সমান অবস্থানে বসানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘রাশিয়াই হামলাকারী দেশ। তারা মানুষ হত্যা করছে, শিশুদের অপহরণ করছে, যুদ্ধবিরতি মানছে না, শান্তির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করছে। তাই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সমান অবস্থা তৈরি করা সম্ভব নয়।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যে কোনো শান্তি চুক্তির সঙ্গে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাধ্যতামূলক গ্যারান্টি থাকতে হবে। অন্যথায় রাশিয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে না। ট্রাম্পের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকে পুতিন নিরাপত্তা গ্যারান্টির নীতিগত বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন ম্যাক্রোঁ।
এদিকে যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি আশাবাদী হলেও বাস্তবে রুশ হামলা অব্যাহত রয়েছে। খারকিভ ও জাপোরিঝিয়ায় বোমা হামলার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘যখন দেশ ধ্বংস হচ্ছে, সাধারণ মানুষ নিহত হচ্ছে, তখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও কর্মকর্তাদের জন্য শান্তি আলোচনা করা কার্যত অসম্ভব।’
শান্তি উদ্যোগ ব্যর্থ হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে অবস্থান নেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া যদি এ পথে না আসে, তবে আমাদের প্রাথমিক ও গৌণ উভয় ধরনের নিষেধাজ্ঞা জোরদার করতে হবে।’
হোয়াইট হাউস বৈঠকে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।
ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ কেবল ইউক্রেনের নয়, বরং গোটা ইউরোপের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত। আমরা আসলে একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশকে নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে দাঁড়িয়ে আছি, যে দেশ আন্তর্জাতিক সীমানাকে সম্মান করছে না। ইউক্রেন ইস্যুতে আমাদের আচরণই হবে বিশ্বে আমাদের যৌথ বিশ্বাসযোগ্যতার পরীক্ষা।’