সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

| ২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

প্রসঙ্গ: সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ভোট !

প্রকাশ: ১৫:১০, ৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৫৯, ৮ নভেম্বর ২০২৫

প্রসঙ্গ: সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ভোট !

রুহিন হোসেন প্রিন্স

অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা অনেকদিন ধরেই বলে আসছি আমরা।
এজন্যে ভোটে দাঁড়ানো ও ভোট দেওয়ার সমঅধিকারের কথাও বারবার বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও এর কোন আলামত দেখা যাচ্ছে না।

ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার টাকার পরিমাণ ও বিগত দিনের তুলনায় খরচের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ আইনিভাবে নির্বাচনের জন্য খরচের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। যদিও বিগত দিনে দেখা গেছে নির্ধারিত খরচের পরিমাণের থেকে বহুগুণ বেশি টাকা খরচ করে শুধুমাত্র ক্ষমতা ভোগকারী প্রার্থীরা। নির্বাচনের পর এরা নির্বাচনী খরচের যে হিসাব দেন ওইসব যে একেবারেই মিথ্যা এ কথা নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ অবস্থা পরিবর্তনের বিন্দুমাত্র আলামত দেখা যাচ্ছে না।
একজন উপদেষ্টা তো আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন ১৫/২০ কোটি টাকা না হলে নাকি নির্বাচনী করা যায় না। 
এবার হিসাব মিলিয়ে দেখুন, নির্বাচনের নামে কি পরিমাণ টাকার খেলা চলবে ?

অনেকদিন ধরেই বলছি: নির্বাচনে সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হলে অন্ততপক্ষে নির্বাচনকে
১. টাকা, 
২. পেশিশক্তি, 
৩. ভয়ের পরিবেশ, 
৪. সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা ও
৫. প্রশাসনিক কারসাজি মুক্ত করতে হবে।

এর কোন আলামত একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। এমনকি প্রচারমাধ্যমে এসব কথাও বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে না। এবারের নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা যে ভয়াবহ রূপ লাভ করবে সেটাই ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
সরকার নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আচরণবিধি ঠিক রেখে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সার্বিক দায়-দায়িত্ব নিলে অনেক কিছু রোধ করা যেত।
নির্বাচনের বিষযয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা হলে এ কথাগুলো সামনে আসতো। বিগত দিনে আলাপ-আলোচনার সময় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এসব দাবি সিপিবি ও বামপন্থীদের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়েছে। 
এগুলো নিয়ে ভাবনার কেউ নেই।

নির্বাচনের আচরণবিধি যতটুকু আছে তাও হয়তো কিছুটা দেখার চেষ্টা হয় নির্বাচন ঘোষণার পর। 
কিন্তু অনেকদিন ধরেই তো নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-প্রপাগান্ডার নামে টাকা খরচের উৎসব চলছে। আমরা বলেছিলাম নির্বাচন কমিশনকে ৩৬৫ দিনই টাকা খরচসহ নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয়টি মনিটর করতে হবে। 
এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট করা হয়নি এবং নির্বাচন কমিশন এখন কোন দায়িত্ব পালন করছে না। তাহলে টাকা খরচের, সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের যে উৎসব চলছে এগুলো রোধ হবে কিভাবে?
যাদের এভাবে খরচ করার মতো পর্যাপ্ত টাকা নেই, তারা নির্বাচনে অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করবে কিভাবে?
আর প্রচারমাধ্যমের কথা নাইবা বললাম। অধিকাংশ প্রচারমাধ্যম বিশেষ এক-দুইটা দল বা এক-দুইজন প্রার্থীকে বিশেষভাবে প্রচারে সহায়তা করছে। 
রাজনীতিতে কার কী নীতি? কে কোন কোন বিষয়, জনস্বার্থে কোন কোন ধরনের নীতিমালা প্রতিষ্ঠা করতে চায়—এসব আলোচনার মধ্যে উঠে আসছে না। এইভাবেই তো চলছে।

যদিও এসব কথা যখন বলছি তখন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের মনে বড় প্রশ্ন হচ্ছে:
“যথাসময়ে অর্থাৎ সরকার ও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে কি?”
সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যথাসময়ে নির্বাচনের কথা জোর দিয়ে বলা হচ্ছে। আমরা বরাবর বলে এসেছি যে, কোন কোন মহল গণতন্ত্রের পথে যাত্রা বাধাগ্রস্ত করার জন্য অবাধ গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এটা মনে রেখে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন আদায় করতে হবে। এই ধারা অব্যাহত রেখে যথাসময়ে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। 
একই সাথে নির্বাচনকে টাকা, পেশিশক্তি, ভয়, সাম্প্রদায়িক প্রচার ও প্রশাসনিক কারসাজি মুক্ত করতে প্রতি মুহূর্তে কণ্ঠস্বর উচ্চকিত করতে হবে। 

নির্বাচনের জন্য পর্যবেক্ষেকের কথা সামনে আসে। এসব পর্যবেক্ষকরা তো নির্বাচনের দিনে কিছু পর্যবেক্ষণ করেন। এবং পর্যবেক্ষণ তুলে ধরার বিষয় বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভিন্ন ঘটনাবলী দেখেছি। 
সেসব বিষয় অন্য সময় আলোচনা করা যাবে। 
কথাটা তুললাম এই কারণে যে, আসন্ন নির্বাচনে স্থানীয় তরুণ সমাজ থেকে শুরু করে আগ্রহীরা এখন থেকেই বিশেষ পর্যবেক্ষণের কাজ করতে পারেন। সরকার নির্বাচনী আচরণবিধি বিষয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রপাগান্ডা করতে পারে। 
এসব বিষয়কে ধরে কোথায় কিভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে সেগুলো সংশ্লিষ্টরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং নির্মোহ অবস্থানে থেকে প্রচারমাধ্যমে তুলে আনতে পারেন। 
অর্থাৎ সর্বত্রই জনগণের শক্তিকে সামনে এনে আগামী দিনে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে আমরা এগুতে চাই।
যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরই সময়ের দাবি। এই কাজে ব্যর্থ হলে দীর্ঘমেয়াদি অগণতান্ত্রিক শাসনের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে দেশ। যা দেশকে আরো পেছনের দিকে নিয়ে যাবে।
সময় বলে দেবে এসব কাজে কে কতটুকু দায়িত্ব পালন করছে। সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে কতটুকু এগোতে পারলাম বা পারলাম না। এসব বিষয় দায়-দায়িত্বই কে কতটুকু পালন করছেন।
এসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই মানুষ সচেতন হবে। 

লেখক: সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সিপিবি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

শেখ রেহানাসহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি গ্রহণ
ঢাকায় একাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ
খুলনায় নানি ও দুই নাতি-নাতনির মরদেহ উদ্ধার
উপদেষ্টা রিজওয়ানার বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ
কাপ্তাই সড়কে সিএনজির উপর হাতির হামলা, প্রাণ গেল বৃদ্ধার
স্টারবাকস বয়কটের ডাক মেয়র জোহরান মামদানির
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১১, নিখোঁজ ১২
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া ফ্যাসিবাদ হটানো সম্ভব নয়—জোনায়েদ সাকি
পুলিশের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল, ১৫ কর্মকর্তার বদলি
সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৭০০
যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কড়াকড়ি
ট্রেনের লাগেজ ভ্যান কেনায় ৩৫৮ কোটি টাকার ক্ষতি, রেলের ছয় কর্মকর্তা দুদকের মামলার মুখোমুখি
ট্রেনের লাগেজ ভ্যান কেনায় ৩৫৮ কোটি টাকার ক্ষতি, রেলের ছয় কর্মকর্তা দুদকের মামলার মুখোমুখি
মোহাম্মদপুরে ৬ পেট্রল বোমা উদ্ধার, আটক ১
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন প্রেম চোপড়া
লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে নতুন বিতর্কে কঙ্গনা রানাউত
বিভিন্ন দেশের ১৫ হাজার প্রবাসীকে ফেরত পাঠালো সৌদি আরব
১০ বছর পর বড় পর্দায় ফিরছেন বজরঙ্গি ভাইজানের ‘মুন্নি’
চুড়ান্ত নিবন্ধন দৌঁড়ে এগিয়ে এনসিপি ও বাসদ, পিছিয়ে আমজনগণ পার্টি
গাজা পরিকল্পনা নিয়ে জাতিসংঘে ভোট সোমবার