‘শোলে’র জেলার আসরানির চিরবিদায়
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:৩৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ও কমেডিয়ান গোবর্ধন আসরানি মারা গেছেন। বয়স হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। গত পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর সোমবার মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি শিল্পী।
১৯৪০ সালের ১ জানুয়ারি রাজস্থানের জয়পুরে এক মধ্যবিত্ত সিন্ধি পরিবারে জন্ম নেন আসরানি। পরিবারের ব্যবসা ছিল কার্পেটের দোকান, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তার আগ্রহ ছিল অভিনয়ে। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে রাজস্থান কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করতেন জীবিকার প্রয়োজনে।
১৯৬০ থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে তিনি নাট্যশিক্ষক সাহিত্য কলাভাই ঠাক্কার-এর অধীনে অভিনয় শেখেন। পরে ১৯৬৪ সালে ভর্তি হন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এফটিআইআই), পুনে-তে। এখান থেকেই শুরু হয় তার পেশাদার অভিনেতা হয়ে ওঠার পথচলা।
আসরানির বলিউড অভিষেক ঘটে ১৯৬৭ সালে, ‘হারে কাঁচ কি চুড়িয়াঁ’ ছবিতে, যেখানে তিনি অভিনেতা বিশ্বজিতের বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেন। পাশাপাশি অভিনয় করেন বেশ কিছু গুজরাটি চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে।
তবে তাকে সর্বাধিক খ্যাতি এনে দেয় ১৯৭৫ সালের কালজয়ী ছবি ‘শোলে’, যেখানে তিনি অভিনয় করেন এক জেলারের চরিত্রে। তার সংলাপ — ‘হাম তোমকো কাইদি নাম্বার ৩০৯ কহকার পুকারেঙ্গে!’ — আজও দর্শকের মুখে মুখে ফেরে। তার হাস্যরস, সংলাপের টোন এবং মুখভঙ্গি তাকে বলিউড ইতিহাসে অমর করে রেখেছে।
দীর্ঘ পাঁচ দশকের অভিনয়জীবনে আসরানি কাজ করেছেন হৃষিকেশ মুখার্জি, গুলজার, বি.আর. চোপড়া প্রমুখ কিংবদন্তি নির্মাতার সঙ্গে। তিনি ছিলেন এক অনন্য বহুমাত্রিক শিল্পী—কমেডি, চরিত্রভিত্তিক ও পার্শ্বচরিত্র—সবখানেই ছাপ রেখেছেন তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়গুণে।
‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘গোলমাল’, ‘আব আউর ইন্টেলিজেন্স’, ‘আমদানি আঠানি খরচা রুপাইয়া’— প্রতিটি ছবিতে তাঁর হাস্যরস দর্শকদের কাছে অনবদ্য আনন্দের উৎস হয়ে আছে।
বলিউড আজ বিদায় জানাচ্ছে এক যুগের হাসির কারিগরকে, যিনি ছিলেন হাসির ভেতরেও গভীর মানবিকতা ও ব্যঙ্গের প্রতীক।