জুলাই সনদ শুধু নামমাত্র স্বাক্ষর: সারজিস আলম
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:৫৭, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৩১, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই সনদ নিয়ে আবারও দায়সারা আচরণ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এটি শুধু নামমাত্র স্বাক্ষর, জনগণের বাস্তব দাবির প্রতিফলন এতে নেই।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকায় শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে ‘টুনিরহাট গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেবল নামমাত্র ঐকমত্য দেখিয়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা হয়েছে, অথচ জনগণের মূল আন্দোলন ও শহীদ পরিবারের প্রত্যাশা এতে প্রতিফলিত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার হোক বা না হোক, আইনি ভিত্তি থাকুক বা না থাকুক—সরকার জুলাই সনদকে কেবল একটি সেইফ এক্সিট হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই নামমাত্র স্বাক্ষর করেই তারা নির্বাচনমুখী হতে চায়।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘গণভোটে যদি জুলাই সনদের পক্ষে রায় আসে, তাহলে জনগণের দাবিগুলোর কী হবে? নোট অব ডিসেন্টগুলো কার্যকর হবে কিনা— সরকারকে সেটা পরিষ্কার করতে হবে।’
‘শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের’ ওপর শুক্রবার সংসদ ভবনের সামনে পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে সারজিস বলেন, ‘তাদের ক্ষোভ ছিল স্বাভাবিক, কিন্তু সরকার লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল, এমনকি রাবার বুলেট চালিয়ে তা দমন করেছে—এটি দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।’
এনসিপির এই নেতা অভিযোগ করেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি ছিল ‘রাজনৈতিক দলের চুক্তির এক মিলনমেলা’, যেখানে শহীদ পরিবার বা জুলাই যোদ্ধাদের জন্য কোনো আসন বা সম্মানজনক স্থানই রাখা হয়নি। ‘এই আচরণের জবাব দিতে হবে সরকারকে,’ বলেন তিনি।
সারজিস আলম মনে করেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে যোদ্ধারা অনেক ছাড় দিয়েছেন, কিন্তু ঘোষণাপত্র কেবল একটি লিখিত কাগজ হয়েই আছে—বাস্তব কোনো প্রয়োগ দেখা যায়নি।’ ‘এভাবে চললে ভবিষ্যতে এই অভ্যুত্থানই মুছে যাবে, বরং যোদ্ধাদের নামেই মামলা হতে পারে,’ সতর্ক করেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পরিষ্কার করা দরকার ছিল, সেগুলো এড়িয়ে গিয়ে তাড়াহুড়ো করে দায়সারা স্বাক্ষর আদায় করা হয়েছে। এতে প্রমাণ হয়—সরকার জনগণের নিরাপত্তার চেয়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই বেশি চিন্তিত।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল প্রধান এবং খেলা আয়োজক কমিটির সদস্যরা।