প্রাচীন পেরুর শহর, তিন হাজার বছরেরও বেশি পুরনো
সমাজকাল
প্রকাশ: ১২:২০, ৯ জুলাই ২০২৫

প্রাচীন পেরুর শহর, তিন হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। উন্মোচন করলেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
সমাজকাল ডেস্ক
পেরুর প্রাচীন এক শহর, যা প্রায় ৩,০০০ বছর আগে বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র ছিল, তা সম্প্রতি উন্মোচিত হয়েছে।
এই শহরটির নাম পেনিকো (Peñico)। এটি পেরুর রাজধানী লিমার উত্তরে হুয়াওরা প্রদেশে অবস্থিত। পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে, যা সিএনএনের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এই শহরটিকে। প্রায় আট বছরব্যাপী খনন ও সংরক্ষণ কাজের পর এটি উন্মোচন করা হয়।
গবেষকদের মতে, খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ সালের দিকে পেনিকো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি উপকূলীয় সুপে উপত্যকার সম্প্রদায়গুলোকে আন্দিজ পর্বতমালা ও আমাজনের অভ্যন্তরবর্তী অঞ্চলের বসতিগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করত। শহরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০ মিটার উচ্চতায় গড়ে তোলা হয়েছিল।
কারাল প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল (ZAC)–এর পরিচালক এবং প্রধান গবেষক রুথ শাদি বলেন,
“এই নগর কেন্দ্রটি কারাল সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠেছিল। এর কৌশলগত অবস্থান উপকূল ও পার্বত্য এলাকার সুপে এবং হুয়াওরার শহরগুলোর সঙ্গে, এমনকি আন্দিজ-আমাজন ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করত।”
খননকালে এখানে ১৮টি স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে সরকারি ভবন ও আবাসিক ইউনিট।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি কাঠামো হলো B1-B3 নামে পরিচিত এক বিশাল সরকারি ভবন। এখানে পাওয়া গেছে কাদামাটির ভাস্কর্য, আনুষ্ঠানিক সরঞ্জাম এবং পুতুতুস নামক শাঁখের তৈরি তূর্য। এগুলো প্রাচীন আন্দিজ সভ্যতায় দেবতাদের আহ্বান ও সমবেত হওয়ার সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
গবেষকরা মনে করেন, কারাল সভ্যতার পতনের পর পেনিকো একটি প্রভাবশালী নগরীতে পরিণত হয়েছিল। এর মর্যাদা তখনকার হেমাটাইট বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল, যা ছিল এক ধরনের লাল রঙের খনিজ এবং আন্দিজ ধর্মীয় চেতনায় এর গভীর প্রতীকী তাৎপর্য ছিল।
বর্তমানে এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে রয়েছে আধুনিক ব্যাখ্যা কেন্দ্র, সংবর্ধনা এলাকা এবং সংরক্ষিত ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য হাঁটার পথ।
এটি উন্মোচনের ঠিক আগেই ঘোষণা করা হয়েছে প্রথম ‘পেনিকো রাইমি’ উৎসবের—যা আসছে শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। এই উৎসবে প্রাচীন ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি, শিল্পকর্ম এবং পাচামামা দেবীর (পৃথিবীর দেবী) প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।