বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

অপূরণীয় ক্ষতির পূর্বেই যুদ্ধ থামাতে হবে

সমাজকাল

প্রকাশ: ১০:৪২, ২৩ জুন ২০২৫

অপূরণীয় ক্ষতির পূর্বেই যুদ্ধ থামাতে হবে

 

অপূরণীয় ক্ষতির পূর্বেই যুদ্ধ থামাতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা এবং সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ বন্ধের জোর আহ্বান জানিয়েছেন পোপ লিও। 

সমাজকাল ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা এবং সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ বন্ধের জোর আহ্বান জানিয়েছেন পোপ লিও। যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিকে তিনি নাটকীয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পরিস্থিতি এখন এমন এক ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা অচিরেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং বিশ্ব মানবতার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।  রবিবার ভ্যাটিকান সিটির অ্যাপোস্টলিক প্যালেস থেকে অ্যাঞ্জেলাস প্রার্থনার পর দেওয়া এক ভাষণে পোপ বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধের এই ট্র্যাজেডিকে থামাতে হবে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পূর্বেই।’ আনাদুলু এজেন্সির বরাতে জানা যায়, রবিবার এই প্রার্থনার পর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ ও ‘নাটকীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং হুঁশিয়ার করেছেন যে, গাজাসহ বিভিন্ন সংঘাত-পীড়িত অঞ্চলে বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ ক্রমেই সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পোপ বলেন, ‘আজকের দিনে মানবতা আগের চেয়ে আরও বেশি করে শান্তির জন্য আহাজারি করছে এবং করুণ আর্তি জানাচ্ছে। এই আর্তির জবাব দিতে হবে দায়িত্ববোধ ও বিবেক দিয়ে, অস্ত্রের গর্জন ও যুদ্ধ-উস্কানিমূলক কথাবার্তার মাধ্যমে নয়।’ তিনি সতর্ক করেন, চলমান সহিংসতা অব্যাহত থাকলে তা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাবে, যেখান থেকে আর ফেরার পথ থাকবে না। পোপের ভাষায়, ‘মানব মর্যাদা যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখন কোনো যুদ্ধই দূরের বিষয় নয়।’ পোপ লিও বলেন, ‘যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান করে না; বরং তা সমস্যাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে এবং জাতিগুলোর ইতিহাসে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। যেসব ক্ষত সারতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম কেটে যায়।’ তিনি বলেন, ‘কোনো সামরিক বিজয়ই এমন মায়ের কান্নাকে ছাপিয়ে যেতে পারে না, যিনি তার সন্তান হারিয়েছেন। কোনো যুদ্ধই এমন শিশুর চোখের ভয়কে মুছে দিতে পারে না, যে আতঙ্কে কাঁপছে। কোনো অস্ত্রই সেই তরুণের ভবিষ্যৎ ফিরিয়ে দিতে পারে না, যেটা যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘কূটনীতি যেন অস্ত্রকে স্তব্ধ করে দেয়। জাতিগুলো যেন তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে শান্তির কর্ম ও উদ্যোগের মাধ্যমে, রক্তাক্ত সংঘাতের মাধ্যমে নয়।’ ভাষণের একেবারে শেষে এসে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেকেই এই আহ্বানে সাড়া দিতে বাধ্য বিশেষ করে যাদের কাঁধে দায়িত্ব রয়েছে।’ মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় যখন রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে অবস্থিত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর মার্কিন বাহিনী ‘অত্যন্ত সফল’ বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে করে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা আরও বেড়ে গেছে। এই হামলার পর ইরান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এক জরুরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানায় এবং হামলাকারীদের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করে নিন্দা জানানোর দাবি তোলে। সংঘাতের সূত্রপাত ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল একযোগে ইরানের বেশ কিছু সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানায়, ইরানের হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানে ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: