বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

হজের সওয়াব পাওয়া যায় যেসব কাজে

সমাজকাল

প্রকাশ: ২৩:০৩, ১০ জুন ২০২৫

হজের সওয়াব পাওয়া যায় যেসব কাজে

     

হজের সওয়াব পাওয়া যায় যেসব কাজে তা জেনে নিন। ইসলাম এমন এক জীবন ব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি আমল ও অভ্যাস মানুষকে আত্মিকভাবে উন্নত করে। সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ইবাদতসমূহের মধ্যে অন্যতম হজ।

 

মাইসারা জান্নাত

  ইসলাম এমন এক জীবন ব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি আমল ও অভ্যাস মানুষকে আত্মিকভাবে উন্নত করে। সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ইবাদতসমূহের মধ্যে অন্যতম হজ। হজ এমন এক মহান ইবাদত, যা কেবল শারীরিক সাধনার নাম নয়; বরং এটি আত্মিক পরিশুদ্ধি, আত্মত্যাগ, সংযম ও আল্লাহর প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা প্রকাশের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। বিশ্ব জুড়ে লাখো মুসলমান যখন আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে পবিত্র মক্কায় সমবেত হন, তখন তাদের দৃঢ় ঈমান, একনিষ্ঠতা ও আত্মবিসর্জনের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে এই হজ।   বাস্তবতা হচ্ছে, সব মুসলমানের পক্ষে হজে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। শারীরিক, আর্থিক, ভৌগোলিকসহ নানা প্রতিবন্ধকতা অনেক সময় এই মহান ইবাদত সম্পাদনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আল্লাহর অফুরন্ত করুণা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসীম দয়ার কারণে ইসলামে এমন কিছু বিকল্প আমলের নির্দেশনা রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে একজন মুমিন হজ ও ওমরাহর সওয়াব অর্জনের সৌভাগ্য লাভ করতে পারেন।   এসব আমল যেমন সহজ, তেমনি প্রতিদিনের জীবনে বাস্তবায়নযোগ্য। নামাজ, জিকির, দ্বীনি শিক্ষা, পিতামাতার আনুগত্য, মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ ইত্যাদি কর্মে আল্লাহ এমন সওয়াব রেখেছেন, যা একজন হাজির অর্জিত সওয়াবের সমতুল্য। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও হাদিস থেকে জানা যায়, হজের বরকত শুধু মক্কা শরিফে গিয়ে নয়; বরং তা একজন মানুষের অন্তরের ইখলাস ও আমলের বিশুদ্ধতার মাধ্যমেও অর্জনযোগ্য।   এটি কেবল হজের বিকল্প বা সমতুল্য সওয়াব পাওয়ার ব্যাপার নয়, বরং এটি আমাদের ঈমানি জীবনের নতুন অনুপ্রেরণা। যে ব্যক্তি হজ করতে পারেননি, তিনি যেন মন খারাপ না করেন; বরং সৎ নিয়ত ও সঠিক আমলের মাধ্যমে হজের সওয়াব অর্জনের আশায় এগিয়ে যান। এখানে এমন কয়েকটি আমল বা কাজ তুলে ধরা হলো, যেগুলোর দ্বারা হজের সওয়াব পাওয়া যায় এবং যেগুলো আমাদের প্রত্যেকের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।   জিকির : ফজরের নামাজের পর থেকে ইশরাক পর্যন্ত মহান আল্লাহর জিকির করা। সূর্যোদযয়ের ১৫ মিনিট পর থেকে ইশরাকের সময় শুরু হয়। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে এবং নামাজের স্থানে বসে থেকে মহান আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকে, সূর্য ওঠার পর দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তার জন্য পূর্ণ হজ ও ওমরাহর সাওয়াব লেখা হয়। এক সাহাবির সূত্রে বর্ণিত, যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ পড়ে, সে যেন ১০০ বার হজ করল!   দ্বীনি জ্ঞান অর্জন : হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কল্যাণকর (দ্বীনি) বিষয় শিখতে বা শিক্ষাদান করতে মসজিদে যায়, তার জন্য পূর্ণ হজের সওয়াব রয়েছে।   জামাতে নামাজ আদায় : হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ কি তোমাদের জন্য জামাতের সঙ্গে এশার নামাজকে হজের সমান এবং ফজরের নামাজকে ওমরাহর সমান করে দেননি?   জুমার নামাজ আদায় : সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রহ.) বলেন, আমার কাছে জুমার নামাজ আদায় করা নফল হজের চেয়ে অধিক প্রিয়।   ঈদের নামাজ আদায় : জনৈক সাহাবি বলেছেন, ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা ওমরাহর সমান এবং ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হজের সমান।   মুসলিম ভাইকে সহযোগিতা করা : হাসান বসরি (রহ.) বলেন, তোমার কোনো ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করা একাধিক হজ করার চেয়েও উত্তম।   পিতামাতার আনুগত্য : নবী করিম (সা.) এক সাহাবিকে বলেন, তোমার মা-বাবার সেবা করো, তাহলে তুমি হজ, ওমরাহ ও আল্লাহর পথে জিহাদের সাওয়াব লাভ করবে।   হারাম থেকে বাঁচা : পূর্বসূরী আলেমদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলেছেন, সামান্য গুনাহ থেকে বিরত থাকা ৫০০ নফল হজের চেয়েও উত্তম।   মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই মহৎ কাজগুলো করার তওফিক দান করুন। আমিন। -অ্যাবাইট ইসলাম অবলম্বনে

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: