‘শাপলা’ চেয়ে ফের ইসিতে আবেদন এনসিপির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:৫৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৪৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের কাছে একটি লিখিত আবেদনে জানিয়েছে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন করে শাপলা, সাদা শাপলা অথবা লাল শাপলা প্রতীককে তালিকাভুক্ত করে তাদের অনুকূলে বরাদ্দ দিতে হবে। দলটি যুক্তি দেখিয়েছে যে শাপলা জাতীয় প্রতীকের একটি উপাদান হলেও তা সরাসরি জাতীয় প্রতীক নয়, ফলে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনগত বাধা নেই।
আজ বুধবার দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি আবেদনপত্র গণমাধ্যমকে পাঠানো হয়, যা নির্বাচন কমিশনকে লেখা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এনসিপি তাদের আবেদনে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩), ১৯৭২ সালের জাতীয় প্রতীক বিষয়ক আদেশ ও বিধিমালা উল্লেখ করে জানিয়েছে, জাতীয় প্রতীক হচ্ছে একসঙ্গে চার উপাদান—শাপলা, ধানের শীষ, তারা এবং পাটপাতা। কিন্তু এগুলো আলাদা করলে তা জাতীয় প্রতীক হয় না। নির্বাচন কমিশন অতীতে বিএনপিকে ‘ধানের শীষ’ এবং জেএসডিকে ‘তারা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। তাছাড়া জাতীয় ফল ‘কাঁঠাল’ ইতোমধ্যেই জাতীয় পার্টির প্রতীক। সেক্ষেত্রে শাপলা প্রতীক বরাদ্দে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।
দলটি জানায়, প্রতীক চেয়ে আবেদন করার পর থেকেই সারা দেশের মানুষ এনসিপিকে শাপলা প্রতীকের সঙ্গে চিনতে শুরু করে। বিশেষ করে জুলাই মাসের দেশব্যাপী "জুলাই পদযাত্রা" কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে শাপলা নিয়ে অংশ নেয়, যা দল ও প্রতীকের মধ্যে এক আত্মীক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
গত জুলাই মাসে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, নির্বাচন কমিশন নীতিগতভাবে শাপলাকে প্রতীক হিসেবে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তি দেখানো হয়, শাপলা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় তা বরাদ্দ দেওয়া যাবে না।
তবে এনসিপি বলছে, এ যুক্তি আইনি ভিত্তিহীন। আরও অভিযোগ করে বলা হয়, কমিশন ইচ্ছাকৃতভাবে দলটির প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। এমনকি ডিজিএফআই ও অন্যান্য সংস্থার লোগোতে শাপলা থাকার অজুহাত দেখিয়ে প্রতীক না দেওয়ার মনোভাব কমিশনের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এনসিপি অভিযোগ করেছে, একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের চাপেই নির্বাচন কমিশন শাপলা প্রতীক তালিকাভুক্ত করছে না। অথচ পূর্বে পুলিশ, বিমানবাহিনী ও সুপ্রিম কোর্টের লোগোতে বিদ্যমান প্রতীক দিয়েও অন্য দলগুলোকে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। ফলে শাপলা প্রতীক না দেওয়ার যুক্তি বৈষম্যমূলক।
সম্প্রতি মাঠপর্যায়ের যাচাই-বাছাই শেষে এনসিপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে কমিশন রাজি হলেও শাপলা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্তে দলটি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এনসিপি বলেছে, এই সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তাদের আহ্বান, কমিশন যেন অবিলম্বে ২০০৮ সালের বিধিমালা সংশোধন করে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা অথবা ৩. লাল শাপলার যেকোনো একটি প্রতীক তাদের বরাদ্দ করে।