“এরিন” ঝড়ো গতিতে রূপ নিল হারিকেনে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩:১১, ১৭ আগস্ট ২০২৫

অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে গড়ে ওঠা হারিকেন এরিন দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে বিরল ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঝড়ে সর্বোচ্চ স্থায়ী বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১৬০ মাইল (২৬০ কিলোমিটার) ছুঁয়েছে এবং আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, আগামী ঘণ্টাগুলোতে এর শক্তি আরও বাড়তে পারে।
দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি ও NOAA’র সতর্কবার্তা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টারের পরিচালক মাইক ব্রেনান জানান, এরিন রাতারাতি ‘বিস্ফোরণধর্মী এক রূপ নিয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এটি ঘণ্টায় অন্তত ৩৪ মাইলের বেশি বেগে শক্তিশালী হয়ে দ্রুত ট্রপিক্যাল স্টর্ম থেকে ক্যাটাগরি-৫ এ উন্নীত হয়। শনিবার ভোরে এর বেগ ছিল ১০০ মাইল, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা ১৬০ মাইলে পৌঁছে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) আগে থেকেই এ বছরকে “স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সক্রিয়” হারিকেন মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ভবিষ্যতে ক্যাটাগরি-৪ ও ক্যাটাগরি-৫ ঝড়ের সংখ্যাও বাড়তে পারে।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে প্রভাব
হারিকেনটি আপাতত লিউয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ, ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ ও পুয়ের্তো রিকোর উত্তরে দিয়ে অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব এলাকায় ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে। শক্তিশালী বাতাসের কারণে পুয়ের্তো রিকো ও মার্কিন ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের একাধিক বন্দরে জাহাজ চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে মার্কিন কোস্টগার্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে বিপজ্জনক স্রোত
এরিন আগামী সপ্তাহে ধীরে ধীরে উত্তরমুখী হয়ে বাহামা দ্বীপপুঞ্জের পূর্বদিক ঘেঁষে উত্তর ক্যারোলিনার আউটার ব্যাংকস অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হবে। যদিও মূল ভূখণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে এর আঘাত হানার পূর্বাভাস নেই, তবে পুরো পূর্ব উপকূলে জীবন-হানিকর সাগর স্রোত ও রিপ কারেন্ট তৈরি হবে। বিশেষ করে ফ্লোরিডা ও মধ্য-অ্যাটলান্টিক অঙ্গরাজ্যগুলো সবচেয়ে বিপজ্জনক ঢেউয়ের মুখোমুখি হবে।
বারমুডাতেও শঙ্কা
আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন, বারমুডাতেও মারাত্মক ঢেউ ও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে দ্বীপটিতেও জরুরি প্রস্তুতি জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রান্তীয় ঝড়ের ঘন ঘন “র্যাপিড ইনটেনসিফিকেশন” এখন বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম সতর্ক সংকেত। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড়গুলো আরও দ্রুত শক্তি অর্জন করছে।