বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

ফ্রান্স-ইতালি-তুরস্কসহ ১৫ দেশে রেড অ্যালার্ট

সমাজকাল

প্রকাশ: ১৬:৩৭, ১ জুলাই ২০২৫

ফ্রান্স-ইতালি-তুরস্কসহ ১৫ দেশে রেড অ্যালার্ট

ফ্রান্স-ইতালি-তুরস্কসহ ১৫ দেশে রেড অ্যালার্ট, ইউরোপজুড়ে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ। শুধু একটি মৌসুমি সংকট নয়—বরং জলবায়ু সংকটেরই হুঁশিয়ারি। সমাজকাল ডেস্ক ইউরোপজুড়ে চলছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। অন্তত ১৫টি দেশে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ মাত্রার তাপ সতর্কতা, যার মধ্যে ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক অন্যতম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধু একটি মৌসুমি সংকট নয়—বরং জলবায়ু সংকটেরই হুঁশিয়ারি। ফ্রান্সের জলবায়ু মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে প্যারিসসহ ১৬টি অঞ্চলে রেড অ্যালার্ট কার্যকর হয়েছে। আরও ৬৮টি অঞ্চলে রয়েছে কম ঝুঁকির 'অরেঞ্জ অ্যালার্ট'। পরিস্থিতিকে 'নজিরবিহীন' বলে অভিহিত করেছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ ফ্রান্সের কর্বিয়েরেস পর্বতমালায় ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ একটি মোটরওয়ে। ইতালির ২১টি শহরে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট। রাজধানী রোম, মিলান, ভেনিস এবং সার্ডিনিয়ায় হিটস্ট্রোক ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। দেশটির জরুরি চিকিৎসা পরিষেবার সহ-সভাপতি মারিও গুয়ারিনো জানিয়েছেন, হিটস্ট্রোকের হার অন্তত ১০ শতাংশ বেড়েছে। স্পেনেও এবারের জুন হতে পারে ইতিহাসের উষ্ণতম মাস। পর্তুগালের লিসবনসহ সাতটি জেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে সোমবার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তুরস্কের ইজমিরে দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ঘণ্টায় ১২০ কিমি গতির বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। অন্তত ২০টি বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে। এছাড়া ক্রোয়েশিয়া, মন্টিনেগ্রো, গ্রিস এবং সার্বিয়ার উপকূলবর্তী এলাকাতেও জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট। এথেন্সের আশপাশে ছড়িয়ে পড়া আগুনের কারণে বহু বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জার্মানির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর প্রভাবে রাইন নদীর পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে কমে গেছে, ফলে নৌপরিবহন ব্যাহত হচ্ছে এবং পরিবহন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এড্রিয়াটিক সাগরে দেখা যাচ্ছে বিষাক্ত লায়নফিশ, হিমবাহ গলে যাচ্ছে দ্রুত। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার টুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, “এই তাপপ্রবাহ শুধু গরমের অভিজ্ঞতা নয়, এটি আমাদের জীবন, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত অধিকারের ওপর সরাসরি হুমকি। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমানো এখন অপরিহার্য।” জলবায়ুবিদরা সতর্ক করছেন, গ্রিনহাউজ গ্যাসের উচ্চমাত্রার কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ, ভবিষ্যতে এমন তাপপ্রবাহ আরও ঘন ঘন এবং ভয়াবহ রূপে ফিরে আসবে।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: