জাপানের দ্বীপপুঞ্জে একদিনে ১৫৮২ বার ভূমিকম্প
সমাজকাল
প্রকাশ: ১২:৫০, ৭ জুলাই ২০২৫

জাপানের দ্বীপপুঞ্জে একদিনে ১৫৮২ বার ভূমিকম্প, জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জে ভূকম্পনের আতঙ্কে দ্বীপ ছাড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সমাজকাল ডেস্ক
জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জে ভূকম্পনের আতঙ্কে দ্বীপ ছাড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত ২১শে জুন থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৫৮২ বার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপ আকুসেকি, যেখানে রোববার গভীর রাতে ৫.১ মাত্রার একটি শক্তিশালী কম্পন আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়। যদিও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের শারীরিক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে টানা কম্পনে দ্বীপবাসী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা রাতে ঘুমাতে পারছেন না এবং দুশ্চিন্তার ভেতর দিন কাটাচ্ছেন।
এই অবস্থায় আকুসেকি দ্বীপের মোট ৮৯ জন বাসিন্দার মধ্যে ইতোমধ্যেই ৪৪ জন দ্বীপ ছেড়ে জাপানের কাগোশিমা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও ১৫ জন বাসিন্দা কাছাকাছি অপর একটি দ্বীপ থেকে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন।
দ্বীপপুঞ্জের মেয়র গেনিচিরো কুবো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা জানি না সামনে কী হতে যাচ্ছে, আর এই কম্পন কবে থামবে, সেটিও অনিশ্চিত।” তিনি জানান, তাদের পৌরসভায় সাতটি বসবাসযোগ্য দ্বীপ ও পাঁচটি নির্জন দ্বীপ রয়েছে, যা কাগোশিমা শহর থেকে ফেরিতে ১১ ঘণ্টার পথ।
ভূমিকম্পবিদরা মনে করছেন, পানির নিচে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং ম্যাগমার প্রবাহ এই ভূমিকম্প প্রবণতার অন্যতম কারণ হতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই একই অঞ্চলে ৩৪৬টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের ঘটনা তা ছাড়িয়ে গেছে ভয়াবহতায়।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর একটি জাপান, যা চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’ হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চলেই প্রতিবছর প্রায় ১৫০০ ভূমিকম্প হয়। বিশ্বব্যাপী রেকর্ড হওয়া মোট ভূমিকম্পের প্রায় ১৮ শতাংশই ঘটে জাপানে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পুরনো মাঙ্গা কমিক পুনঃপ্রকাশকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়েছিল ২০২৫ সালের ৫ জুলাই একটি ভয়াবহ দুর্যোগ ঘটবে—যা বাস্তবে ঘটেনি। তবুও সাম্প্রতিক ভূকম্পনের প্রবণতা সেই গুজবকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে এবং কিছু বিদেশি পর্যটক তাদের জাপান ভ্রমণ বাতিল করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে বড় পরিসরে উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালানো হবে।