পাকিস্তানের সঙ্গে ২.৬ বিলিয়ন ডলারের শিল্পচুক্তি স্বাক্ষর করলো রাশিয়া
সমাজকাল
প্রকাশ: ১৯:৫৬, ১৩ জুলাই ২০২৫

পাকিস্তানের সঙ্গে ২.৬ বিলিয়ন ডলারের শিল্পচুক্তি স্বাক্ষর করলো রাশিয়া। দীর্ঘদিনের আলোচনা শেষে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বড়সড় শিল্পচুক্তিতে পৌঁছালো পাকিস্তান ও রাশিয়া। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে উল্লেখযোগ্য হারে আমদানি নির্ভরতা কমানোই এ চুক্তির মূল লক্ষ্য।
সমাজকাল ডেস্ক
দীর্ঘদিনের আলোচনা ও প্রস্তুতির পর অবশেষে বড়সড় শিল্পচুক্তিতে পৌঁছালো পাকিস্তান ও রাশিয়া। প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই চুক্তির আওতায় করাচিতে গড়ে তোলা হবে একটি অত্যাধুনিক ইস্পাত কারখানা। ইসলামাবাদের আশা, এর ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ হবে এবং আমদানি নির্ভরতা উল্লেখযোগ্য হারে কমবে।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় পাকিস্তান দূতাবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। এতে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানের শিল্প ও উৎপাদন মন্ত্রণালয়ের সচিব সইফ আনজুম এবং রুশ প্রতিষ্ঠান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এলএলসি-এর মহাপরিচালক ভাদিম ভেলিচকো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের বিশেষ সহকারী হারুন আখতার খান এবং রাশিয়ায় নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ খালিদ জামালি।
জানা গেছে, ৭০০ একর জমির উপর নির্মাণ হবে এই নতুন ইস্পাত কারখানা। বর্তমানে পাকিস্তানে চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে প্রায় ৩.১ মিলিয়ন টনের ঘাটতি রয়েছে। এই প্রকল্প চালু হলে সেই ব্যবধান অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করছে সরকার। এছাড়া, ইস্পাত আমদানির উপর নির্ভরতা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
চুক্তিটি একদম নতুন নয়। ১৯৭০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় একই স্থানে একটি ইস্পাত কারখানা গড়ে তোলা হয়েছিল। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে ২০১৫ সালে সেই প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে যায়, যা ১৯৯২ পর্যন্ত চালু ছিল। সেসময় ২.১৪ বিলিয়ন ডলারের লোকসান গুনতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। নতুন চুক্তির আওতায় সেই পুরোনো প্ল্যান্টকেই আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় পুনরায় চালু করা হচ্ছে।
পাকিস্তান সরকার আশা করছে, রাশিয়া থেকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজ ও কারিগরি সহায়তা পাওয়ার মাধ্যমে এই প্রকল্প সফল হবে। এর পাশাপাশি, এই উদ্যোগ রাশিয়া ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য করিডোর ও লজিস্টিক সংযোগ সম্প্রসারণের পথও খুলে দেবে বলে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের আধুনিকীকরণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের মোটরওয়ে নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজেশন, ই-ট্যাগিং ও সিসিটিভি নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে। এতে আঞ্চলিক সংযোগ এবং আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষ সহকারী হারুন আখতার খান।
এদিকে, গত মাসেই পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও উজবেকিস্তান— তিন দেশ ‘ইউএপি রেল প্রকল্প’ এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়, যা আঞ্চলিক পরিবহন ও বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।