কিছু দেশের ওপর শুল্ক হতে পারে ৭০%
সমাজকাল
প্রকাশ: ১২:২০, ৫ জুলাই ২০২৫

কিছু দেশের ওপর শুল্ক হতে পারে ৭০%। বিশ্ববাণিজ্যে ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে নতুন শুল্ক। ৭০% পর্যন্ত শুল্ক বসাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপ ও জাপানসহ ১০-১২টি দেশ পেতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউসের চিঠি। এখন পর্যন্ত শুধু যুক্তরাজ্য ও চীনের সঙ্গে চুক্তির কাঠামো চূড়ান্ত। যারা চুক্তি করতে পারবে না, তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করেই জানানো হবে নিয়ম।
সমাজকাল ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিশ্ববাণিজ্যে বড় ধরনের আলোড়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কিছু দেশের ওপর শুল্ক হার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে এই নতুন শুল্কহার কার্যকর করার লক্ষ্য নিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে একাধিক দেশের কাছে চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ট্রাম্প শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্ড্রুজ বিমানঘাঁটিতে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে চূড়ান্ত রূপ দিয়েছি। আগামীকাল থেকে ১০ থেকে ১২টি দেশের কাছে চিঠি পাঠানো শুরু করব, যেখানে জানিয়ে দেওয়া হবে তারা কী পরিমাণ শুল্ক দেবে।”
তিনি আরও জানান, নতুন শুল্কহার ১০% থেকে শুরু করে ৬০% বা ৭০% পর্যন্ত হতে পারে এবং এগুলো ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে গত এপ্রিলে ট্রাম্প অধিকাংশ বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ‘পাল্টা’ শুল্ক বসান, যার ফলে শেয়ারবাজারে ধস নামে এবং মার্কিন ডলার ও বন্ড মার্কেটেও প্রভাব পড়ে। ৪ জুলাই ‘ইনডিপেন্ডেন্স ডে’ উপলক্ষে মার্কিন শেয়ারবাজার বন্ধ থাকলেও, বিশ্ববাজারে তখন থেকেই পতনের ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
কারা থাকছে শুল্কের আওতায়?
যে দেশগুলো এই শুল্কবৃদ্ধির মুখে পড়তে পারে, তাদের নাম এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানকে ‘অত্যধিক সুবিধাভোগী’ দেশ হিসেবে সমালোচনা করেছেন। গত সপ্তাহে তিনি জাপানের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছিলেন, যদিও এটি হয়তো কৌশলগত চাপে রাখার অংশ ছিল।
ইউরোপ ও ভারতের সঙ্গে আলোচনা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, “আমরা কঠিন আলোচনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং সপ্তাহজুড়ে তা চলতে পারে।” তবে হোয়াইট হাউস বলছে, যারা ভালোভাবে আলোচনায় আগ্রহী, তাদের জন্য সময়সীমা কিছুটা নমনীয় হতে পারে।
ভারতের ক্ষেত্রে, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, “ডেডলাইন খুব একটা কঠোর নয়।” ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টও একই কথা বলেছেন, আশা করছেন আগামী ‘লেবার ডে’র আগেই আলোচনা সম্পন্ন হবে।
তবে শুক্রবার ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দেন, “না, খুব একটা ছাড় দেওয়া হবে না। ১ আগস্ট থেকেই শুল্ক কার্যকর হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে টাকা আসতে শুরু করবে।”
মাত্র তিনটি চুক্তি এখনো সম্পন্ন
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র মাত্র দুটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চুক্তির কাঠামো চূড়ান্ত করেছে— যুক্তরাজ্য এবং চীন। ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হলেও তার আনুষ্ঠানিক রূপ এখনও অজানা।
ট্রাম্প দাবি করেন, “আমি প্রায় ২০০টি চুক্তি করেছি।” তবে পরবর্তীতে তিনি স্বীকার করেন, এত অল্প সময়ে শত শত চুক্তি সম্ভব নয়। সেজন্য ৯ জুলাইয়ের মধ্যে যারা চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে না, তাদের ক্ষেত্রে সরাসরি শুল্ক আরোপ করে দেওয়া হবে।
ছোট দেশগুলোর জন্য কম শুল্ক
যেসব ছোট দেশ আলোচনায় ঢুকতে পারেনি, তাদের ওপর ১০% হারে শুল্কই বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। “আমরা অনেক ছোট দেশের সঙ্গে একই শুল্কহার রাখব,” তিনি বলেন।
বিশ্বের বাজারে এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়া এখনই দৃশ্যমান। নতুন এই শুল্কনীতি আগামী সপ্তাহে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় ধরনের ঝাঁকুনি আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।