আদানিকে বাংলাদেশের ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ
প্রকাশ: ১০:৫২, ২ জুলাই ২০২৫
আদানিকে বাংলাদেশের ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ। ফলে বাংলাদেশ-আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি আবারও আর্থিকভাবে স্বাভাবিক ও কার্যকর অবস্থায় ফিরে এসেছে।
সমাজকাল প্রতিবেদক
ভারতীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারকে জুন মাসে ৪৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। ইকোনমিক টাইমস-এর খবরে জানানো হয়, ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে সরবরাহ করা বিদ্যুতের বিপরীতে এই বিশাল অঙ্কের পরিশোধ করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, এটি আদানি পাওয়ারের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এককালীন অর্থ পরিশোধ। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে পেয়ে আসছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সব বকেয়া— বিলম্ব ফি ও অতিরিক্ত খরচসহ— পরিশোধ করার ফলে বাংলাদেশ-আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি আবারও আর্থিকভাবে স্বাভাবিক ও কার্যকর অবস্থায় ফিরে এসেছে। যে পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) বাংলাদেশ তদন্ত করছিল, সেটি এখন ‘পরিষ্কার’ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ পূরণ করে। এখন দুই ইউনিটই (প্রতিটিতে ৮০০ মেগাওয়াট) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদানিকে।
সূত্র জানায়, একটি পূর্বশর্ত ছিল— বাংলাদেশ যদি ৩০ জুনের মধ্যে আগের অর্থবছরের সব বকেয়া পরিশোধ করে, তাহলে আদানি গ্রুপ বিলম্ব ফি মওকুফ করবে। সেই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন সময়মতো বিল পরিশোধ করছে। ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাংলাদেশ ১৮০ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ একটি লেটার অব ক্রেডিট উপস্থাপন করেছে এবং বাকি পাওনার জন্য একটি সার্বভৌম গ্যারান্টিও দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বকেয়া তখন প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আদানি পাওয়ারের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) দিলীপ ঝা এক ব্রিফিংয়ে জানান, আদানির কাছে মোট পাওনা ছিল প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ১.২ বিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যেই পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। বিলম্ব ফি বাবদ দাবি ছিল আরও ১৩৬ মিলিয়ন ডলার।
এই চুক্তি সচল রাখার মধ্যে দিয়ে ভারতের জন্যও কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন এসেছে। গোড্ডা প্রকল্পটি আগে একটি পৃথক সাবসিডিয়ারিতে থাকলেও এখন আদানি পাওয়ারের মূল ইউনিটে একীভূত করা হয়েছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও সহজতা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া আদানি পাওয়ারের ক্রেডিট রেটিং “এএ” থেকে “এএ+” হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ঋণের সুদের হার হ্রাসে সহায়ক হতে পারে।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস,