বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

বৈশ্বিক বাণিজ্য ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠছে, সতর্ক করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

সমাজকাল

প্রকাশ: ১৪:০৯, ১১ জুলাই ২০২৫

বৈশ্বিক বাণিজ্য ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠছে, সতর্ক করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

বৈশ্বিক বাণিজ্য ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠছে, সতর্ক করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, বাণিজ্য শুধু প্রবৃদ্ধির মাধ্যম নয়—তা এখন হয়ে উঠছে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার।

সমাজকাল ডেস্ক

বিশ্ব এখন এমন এক সময়ে প্রবেশ করেছে, যেখানে বাণিজ্য আর শুধু প্রবৃদ্ধির মাধ্যম নয়—তা হয়ে উঠছে চাপ ও নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার। এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

বুধবার (৯ জুলাই) কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ান জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘বৈশ্বিক বাণিজ্য আজ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই বাণিজ্যযুদ্ধে না জড়িয়ে সচেতনভাবে এগোতে হবে।’’

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ঘোষিত উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর উদ্বেগ বাড়ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। বাংলাদেশের ওপরও ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।

আনোয়ার বলেন, ‘‘যে বিষয়গুলো একসময় উন্নয়নের চালিকাশক্তি ছিল, এখন সেগুলোই একঘরে করার ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে একতাবদ্ধ হয়ে এই নতুন বাস্তবতার মোকাবিলা করতে হবে।’’

তিনি জোর দেন—পরস্পরীয় বাণিজ্য বাড়ানো, আঞ্চলিক সংহতি জোরদার এবং বাইরের শক্তির ওপর নির্ভরতা কমানোর ওপর। তাঁর মতে, ‘‘এই হুমকি ক্ষণস্থায়ী কোনো ঝড় নয়, এটি সময়ের দীর্ঘস্থায়ী বাস্তবতা।’’

এদিকে মালয়েশিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী জাফরুল আজিজ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে সরকারি ক্রয়নীতি, হালাল সনদ, চিকিৎসা মানদণ্ড ও ডিজিটাল করসহ কিছু অভ্যন্তরীণ নীতিতে হস্তক্ষেপ জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী হলে তারা আপস করবে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আসিয়ান দেশগুলো এখন এক কঠিন দ্বিধার সামনে—একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ছাতা, অন্যদিকে চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব। কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ এখন তাদের সামনে।

সভার ফাঁকে আরও জানা যায়, আসিয়ান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বছরের শেষ দিকে। সেখানে এই বাণিজ্য সংকট নিয়ে যৌথ অবস্থান তৈরির চেষ্টা করা হবে।

উল্লেখ্য, আসিয়ান ভুক্ত দশটি দেশের মধ্যে আটটিই এই নতুন মার্কিন শুল্কের আওতায় পড়েছে। এসব দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই একটি চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হার ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামাতে সক্ষম হয়েছে।

বিশ্লেষক কলিন্স চং ইউ কিট বলেন, ‘‘রুবিওর এশিয়া সফর আসিয়ানকে মনে করিয়ে দেবে যে, নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র এখনও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তবে এখন থেকে এই সমর্থনের সঙ্গে আরও স্পষ্ট শর্ত জড়িয়ে থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: