বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার জাকির হোসেন সাময়িক বরখাস্ত

সমাজকাল

প্রকাশ: ১০:৩৫, ২ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার জাকির হোসেন সাময়িক বরখাস্ত

     

চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার জাকির হোসেন সাময়িক বরখাস্ত।কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সময় কাস্টম হাউস বন্ধ রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়

 

সমাজকাল ডেস্ক

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ দাবিতে চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সময় কাস্টম হাউস বন্ধ রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-২ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে বরখাস্ত করা হয়। প্রজ্ঞাপনটি স্বাক্ষর করেন বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান। সরকারি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, এনবিআরের পূর্ব নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও গত ২৮ ও ২৯ জুন কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন না কমিশনার জাকির হোসেন। এতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কার্যত অচল হয়ে পড়ে, ব্যাহত হয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম এবং বড় ধরনের রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়ে সরকার। এই ঘটনায় সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি খোরপোষ ভাতা পাবেন বিধি অনুযায়ী। এছাড়া, দায়িত্বে অবহেলা ও আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনার ভিত্তিতে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে, এনবিআরে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধানে নেমেছে। এর আগে আন্দোলনরত ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের তথ্য প্রকাশ করেছিল দুদক। গত সপ্তাহ থেকে এনবিআরের বিভিন্ন শাখায় কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছিল, যা ২৮ জুন থেকে রূপ নেয় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এ। এতে দেশের রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার এনবিআরকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং কর্মস্থলে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়। সরকারি হুঁশিয়ারির মধ্যেই মধ্যস্থতায় নামেন ব্যবসায়ী নেতারা। পরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আন্দোলন প্রত্যাহার করে এবং ১ জুলাই থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে ফিরে যান।   তবে আন্দোলন প্রত্যাহারের পরও বদলি, মামলা ও বিভাগীয় ব্যবস্থার আশঙ্কা থেকে গেছে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে। চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনারের বরখাস্তের ঘটনাটি সেই শঙ্কাকে আরও জোরদার করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, সরকার রাজস্ব সংগ্রহে দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের শর্ত পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে এই পদক্ষেপকে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান। এর কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটলে জাতীয় অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব পড়ে। ফলে এই বরখাস্তকে প্রশাসনিক জবাবদিহির দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্ট মহল।  

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: