বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

হামাস ‘শান্তির জন্য প্রস্তুত’,  গাজায় বোমা বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:৩৩, ৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১২:৩৪, ৪ অক্টোবর ২০২৫

হামাস ‘শান্তির জন্য প্রস্তুত’,  গাজায় বোমা বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

ছবি : সংগহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, হামাস এখন ‘স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত’, এবং তিনি ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা, বিবিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রে গণমাধ্যমগুলোতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।


হামাস শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দিয়েছে। হামাসের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংগঠনটি গাজার প্রশাসন ফিলিস্তিনি প্রযুক্তিবিদদের একটি অন্তর্বর্তীকালীন টিমের হাতে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত, এবং সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে।


তবে হামাস তাদের নিরস্ত্রীকরণ বা অস্ত্র ত্যাগের বিষয়ে কোনো অবস্থান পরিষ্কার করেনি, যা শান্তি প্রক্রিয়ার সবচেয়ে জটিল প্রশ্নগুলোর একটি। তবুও, সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে “তাৎক্ষণিকভাবে” আলোচনায় অংশ নিতে ইচ্ছুক।


শুক্রবার রাতের এক ভিডিও ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “এটি এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত। আমরা শান্তির ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছি। এখন প্রয়োজন, এই অঙ্গীকারগুলোকে বাস্তব চুক্তিতে রূপ দেওয়া।”


ট্রাম্প পরে তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “আমি বিশ্বাস করি হামাস সত্যিই এখন শান্তির জন্য প্রস্তুত। ইসরায়েলকে অনুরোধ করছি, গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করুন এবং আলোচনার সুযোগ দিন।”


অন্যদিকে ইসরায়েল এখনো গাজায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবারই কমপক্ষে ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের পরিসংখ্যান ভয়াবহ—গাজায় ৬৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, আহত ১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি। হাজারো মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।


ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই হস্তক্ষেপ শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে পারে।


কায়রো, দোহা ও আঙ্কারার কূটনৈতিক মহলে ইতিমধ্যে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে—হামাস যদি সত্যিই প্রশাসন ছাড়ে, তবে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কে নেতৃত্ব দেবে? ফাতাহ, হামাস ও প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের সম্ভাবনাও আলোচনায় রয়েছে।
বিশ্লেষক উমুত উরাসের মতে, “এটি যদি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, তবে ২১শ শতকের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের অবসানের পথ খুলে যেতে পারে।”
 

আরও পড়ুন