আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
সমাজকাল
প্রকাশ: ১৩:৩৮, ৬ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৫৭, ১৪ আগস্ট ২০২৫

আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন, বিচার চলবে পলাতকদের অনুপস্থিতিতেই।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। বুধবার (৬ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
আবু সাঈদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সাহসী মুখ, পুলিশের গুলির সামনে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়েছিলেন—এক প্রতীকী প্রতিবাদের দৃশ্য যা দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। তার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলার বিচারকাজে এবার গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলো।
অভিযুক্ত কারা?
মামলার ৩০ আসামির মধ্যে এখনও ২৪ জন পলাতক। বাকিদের মধ্যে তিনজন গ্রেফতার রয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনারসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিরা। এদের বিরুদ্ধে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় পলাতক হিসেবেই বিচার চলবে বলে ট্রাইব্যুনাল জানায়।
গ্রেফতার তিন আসামির মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টর মো. শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশ।
আদালতের আদেশ ও আইনজীবীরা
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানিতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। গ্রেফতারদের মধ্যে শরিফুল ইসলামের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো, কনস্টেবল সুজনের পক্ষে আজিজুর রহমান দুলু এবং ছাত্রলীগ নেতা আকাশের পক্ষে সালাহউদ্দিন রিগ্যান।
বিচার কাজকে এগিয়ে নিতে পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে আদালত থেকে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মোট চারজন আইনজীবী এই ২৪ জনের পক্ষে লড়বেন। আর গ্রেফতার ছয় জনের মধ্যে যারা এখনও আইনজীবী নিয়োগ দেননি, তাদের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল জানতে চেয়েছে।
তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন তদন্ত সংস্থা মামলার প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়। পরে ৩০ জুন তা আনুষ্ঠানিকভাবে আমলে নেওয়া হয়। এরপর ১৩ জুলাই রাসেল ও পারভেজ নামে আরও দুই আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের আদেশ অনুসারে, গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রেক্ষাপটে তদন্তে উঠে এসেছে গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও নির্যাতনের তথ্য, যার ফলে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিচার শুরু করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।