ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘দ্বিমুখী চাপে’ নেতানিয়াহু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২১:৩৬, ২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:০৯, ২ অক্টোবর ২০২৫
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও বিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠন নিয়ে ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথমদিকে সেটি মেনে নিলেও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আবারও আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি কখনোই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবেন না এবং গাজার অধিকাংশ অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি অব্যাহত থাকবে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবে কিছুটা গতি এসেছে জর্ডান, মিশর, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং তুরস্কের মতো প্রভাবশালী মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সমর্থনের কারণে। এই দেশগুলো মনে করছে, প্রস্তাব কার্যকর হলে অঞ্চলটিতে দীর্ঘদিনের সংঘাত প্রশমিত হতে পারে এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আলোচনাকে এগিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি কঠোর সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামাসকে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ‘হ্যাঁ বা না’ উত্তর দিতে হবে। যদি উত্তর নেতিবাচক হয়, তাহলে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। এই কড়া শর্ত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল উভয়পক্ষের ওপর নতুন চাপ তৈরি করেছে।
প্রস্তাবিত চুক্তির কাঠামো অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরিকল্পনার মতো, যা এক বছরেরও বেশি আগে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে বাইডেনের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় মূলত নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার কট্টর ডানপন্থিদের চাপ ও নতুন দাবি যুক্ত করার কারণে।
বর্তমানে নেতানিয়াহু এক জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য, অন্যদিকে তার নিজ সরকারের কট্টরপন্থি অংশ তাকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র স্বীকৃতি না দেওয়ার পক্ষে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য করছে। ফলে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল ও সংকটপূর্ণ হয়ে উঠছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই প্রস্তাব কার্যকর হলে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের ওপর প্রকৃত চাপ প্রয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র, যা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য একটি নতুন মোড় তৈরি করতে পারে।
